করোনাভাইরাস মহামারির চলমান সংকটের মধ্যেও প্রবাসী আয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত রয়েছে। চলতি মাসের ১২ দিনেই ১০৬ কোটি ৬০ লাখ (এক দশমিক শূন্য ৬৬ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ধরে) যার পরিমাণ আট হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
দেশের ইতিহাসে একক মাসের মাত্র ১২ দিনে এর আগে কখনোই এতো পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি একটি বিরল ঘটনা। এর ফলে সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরে জুলাই থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৯ দশমিক ৮৯১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এই একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ৬ দশমিক ৮৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৪৩.৪২ শতাংশ বেশি। প্রবাসী আয়ের এ ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকার জন্য সরকারের সময়োপযোগী ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে।
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অপ্রত্যাশিত অভিঘাত কোভিড-১৯-এর প্রভাবে বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে সারা বিশ্ব। এই সময়টাতে আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধারা কষ্ট করে অর্থ পাঠিয়ে আমাদের অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে চালকের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটে বিদেশ থেকে বৈধপথে রেমিট্যান্স তথা প্রবাসী আয় পাঠালে ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। এর পরপরই রেমিট্যান্স পাঠানো বাড়তে শুরু করলে অনেকেই বলতে শুরু করলেন এগুলো ঠিক নয়, থাকবেনা, টেকসই নয়। ’
তিনি বলেন ‘চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাস যখন অসাধারণ এবং অবিশ্বাস্য গতিতে রেমিট্যান্স অর্জিত হচ্ছিল তখন কর্মীরা তাদের কাজকর্ম বা ব্যবসা গুটিয়ে দেশে ফিরে আসছেন, এমন বিভিন্ন মন্তব্য করতে শুরু করলেন। সেই সব লোকদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাও তাল মিলিয়ে বলতে শুরু করল এ প্রবাহ ঠিক নয়, টেকসই হবে না। কিন্তু প্রণোদনা ঘোষণার পর থেকে আজ পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির যে প্রবাহ, তাতে তাদের ভবিষ্যদ্বাণী ভুল প্রমাণিত হয়েছে এবং আমরা যে সঠিক ছিলাম আরও একবার তা প্রমাণিত হলো। ’
মন্ত্রী বলেন, চলতি নভেম্বরের ১২ তারিখ পর্যন্ত প্রবাসী আয় এসেছে ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি, যা দেশের ইতিহাসে মাত্র ১২ দিনে কখনও অর্জিত হয়নি। গড়ে প্রতি মাসে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের উপরে প্রবাসী আয় অর্জন, এটি ইতিহাসে একটি বিরল ঘটনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে সরকারের এ অভূতপূর্ব সাফল্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।