প্রেমের ফাঁদে পেলে ফেনীর সোনাগাজীর চরদরবেশ ইউনিয়নের এক তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন একই গ্রামের প্রেমিক জহিরুল ইসলাম প্রকাশ জিয়া উদ্দিন।
কিন্তু একপর্যায় মুখ ফিরিয়ে নেয় প্রেমিক। তবে হাল ছাড়েনি প্রেমিকা। ফেনীর সোনাগাজী থানায় দায়ের করেন ধর্ষণ মামলা। মামলা নং ২৪। অবশেষে গ্রেফতার হন প্রেমিক। জামিন পেতে প্রেমিকের আইনজীবী ও স্বজনরা নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালতে দৌঁড়ঝাপ শুরু করে। কিন্তু জামিনের সাড়া মেলেনি। আর কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে রাজি হলেন বিয়ের শর্তে।
আদালত বিয়ের শর্তে ১ নভেম্বর জামিন দেন ওই আসামিকে। বিয়ের প্রমাণপত্র আদালতে পেশ করতে পারলে মিলবে মুক্তি।
মামলার এজহারের তথ্য অনুযায়ী সোনাগাজী থানার পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) মো. আবদুর রহীম বলেন, ২৭মে ভোররাত ৩টার দিকে ছেলের বাড়িতে মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়। সেদিন বিকেলে সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের হয় এবং একইদিন জহিরুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ১ নভেম্বর মামলায় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের হাইকোর্ট বেঞ্চে জামিন নিতে আসেন জিয়া উদ্দিন। ঐ তরুণীকে বিয়ের শর্তে জামিনের কথা বলে হাইকোর্ট। আসামিও বিয়ের শর্ত মেনে নেয়। আর এ বিয়ের আয়োজনের দায়িত্ব দেয়া হয় ফেনী জেলা কারা কর্তৃপক্ষকে।
ছেলের বাবা আবু সুফিয়ান বলেন, আমি ও মেয়ের বাবা মামাসহ ফেনী কারাগারে গিয়েছিলাম বিয়ের ব্যাপারে চূড়ান্ত আলাপ করতে। কিন্তু জেলার না থাকায় বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে পারিনি। পরবর্তীতে জেলার আসলে আলোচনা করে দ্রুত বিয়ের কাজটি সম্পাদন করবো।
তিনি আরও বলেন, কারাগারে বিয়ে হলে জহির মুক্তি পেলে বাড়িতে বড় করে অনুষ্ঠান করবো। আনুষ্ঠানিকভাবে ছেলের বউকেও ঘরে তুলে নেবো। তবে জিয়া এখন ফেনী কারাগারে আছে।
মেয়ের বাবা বলেন, বিয়ের ব্যাপারে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমি চাই আমার মেয়ের সুখ শান্তি। তারা যখনই চাইবে আমি মেয়ে তাদের হাতে তুলে দেবো। আর কিছু বলতে চাই না।
এ বিষয়ে ফেনী জেলা কারাগারের জেল সুপার আনোয়ারুল করিম বলেন, গত কয়েকদিন আগে আমরা হাইকোর্টের একটি আদেশ পেয়েছি। এখন নিম্ন আদালতের একটি আদেশের অপেক্ষোয় আছি। তবে দু’পক্ষের (বর-কনে) পরিবারের সাথে আমাদের কথা হচ্ছে। তারা বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগামী সপ্তাহে বিয়ের দিন তারিখ ধার্য করা হবে। আদালত এক মাসের সময় বেঁধে দিয়েছেন।
‘বিয়ে কখন কীভাবে হবে?’ এমন প্রশ্নের উত্তরে জেল সুপার আরও বলেন, (বর-কনে) পক্ষ সব ঠিকঠাক করে নেবে। কারাগারে শুধু ৫ মিনিটের কাজ। কাবিননামায় সাক্ষর করে বাকী কাজ তারা বাইরে সেরে নেবে।
ফেনী আদালত সূত্রে জানা যায়, এটি ফেনী আদালতের নারী-শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের ১৫৮/২০ নং মামলা। জিআর ১১৩/২০ মামলা। ফেনী জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ ফেনী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উচ্চ আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে পুনরায় আদেশ চান। উচ্চ আদালতের আদেশ পালন করতে ফেনী জেলা কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছে নিম্ন আদালত।