প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন আবাহনী

প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন আবাহনী

গ্রামীণফোন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জিতেছে ঐতিহ্যবাহী আবাহনী লিমিটেড। মঙ্গলবার লিগের শেষ ম্যাচে দুইবার পিছিয়ে পড়েও আবাহনী শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলে ড্র করতে সক্ষম হয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের বিপক্ষে। পয়েন্ট টেবিলে এগিয়ে থাকার সুবাদে পেশাদার লিগে চতুর্থ শিরোপা জিতে নেয় আকাশি-নীলরা।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে ১১ মিনিটে গোলের প্রথম সুযোগটি কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় আবাহনী। মিডফিল্ডার জাহিদ হোসেনের ক্রসে ঘানাইয়ান ফরোয়ার্ড আউদু ইব্রাহিমের ভলি জাল খুঁজে পায়নি। দুই মিনিট পরে পাল্টা আঘাত হানে মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা। ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার লিমার থ্রু পাসে বল নিয়ে বিপদ সীমায় ঢুকে পড়েন নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে চিজোবা। কর্নারের বিনিময়ে বিপদ মুক্ত করেন আবাহনী গোলরক্ষক জিয়া।

১৫ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধা। এবার আর ভুল করেননি সানডে। লিমার কর্নার থেকে বল পেয়ে মিডফিল্ডার আরিফুল পোস্টের সামনে থাকা সানডেকে বাড়িয়ে দেন। বল আবাহনী পোস্টে পাঠিয়ে দেন সানডে (১-০)। ২১ মিনিটে লিমার অসাধারণ ফ্রিকিক পোস্টে ঢোকার মূহুর্তে রক্ষা করেন গোলরক্ষক জিয়া। ২৯ মিনিটে ফ্রাঙ্কের শট মুক্তিযোদ্ধা গোলরক্ষক মোস্তাক দক্ষতার সঙ্গে প্রতিহত করায় সমতা ফেরাতে ব্যর্থ হন আবাহনী। ৪৩ মিনিটে ইব্রাহিমের থ্রু পাসে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন তুয়াম ফ্রাঙ্ক। তার শট মোস্তাক কর্নার করে রক্ষা করায় বিরতির আগে সমতা ফেরাতে পারেনি কোচ আলি আকবর পোরমুসলিমির দল।

বিশ্রামের পর সমতা ফেরাতে মরিয়া হয়ে ওঠে আবাহনী। ৬৮ মিনিটে কর্ণার থেকে দারুণ সুযোগ নষ্ট করে আবাহনী। প্রথম প্রচেষ্টায় ইব্রাহিমের হেড ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে প্রতিহত হওয়ার পর সুজনের শট বাইরে চলে যায়। ৭০ মিনিটে সমতা ফেরায় ধানমন্ডির ক্লাবটি। ইব্রাহিমের পাসে বামপ্রান্ত দিয়ে জাহিদ বক্সে ঢুকে নিচু ক্রসে বল বাড়িয়ে দেন আনমার্কড সাখাওয়াত রনির উদ্দেশ্য। পোস্টের সামনে থেকে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় নিশানা ভেদ করেন বদলী খেলোয়াড় রনি (১-১)।

তবে বেশিক্ষণ সমতা ধরে রাখতে পারেনি লিগের সবচেয়ে সফল দলটি। তিন মিনিট পরেই মুক্তিযোদ্ধাকে ফের এগিয়ে দেন সানডে। লিমার ফ্রিকিকে বল পেয়ে আবাহনী গোলরক্ষক জিয়াকে পরাস্ত করেন গত সুপার কাপে মোহামেডানকে ফাইনালে তোলার নায়ক সানডে  (২-১)। ম্যাচের অন্তিম মুহুর্তে  গোল করে আবাহনী শিবিরকে উল্লাসে মাতান জাহিদ। ইয়োকো সামনিকের ভাসানো বল মুক্তিযোদ্ধা গোলরক্ষক মোস্তাক গ্লাভসে নেওয়ার মুহুর্তে হেড নেন জাহিদ। দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় বল মুক্তিযোদ্ধার জালে জড়িয়ে দিতেই উৎসবে মাতে আকাশি-নীল শিবির (২-২)।

এই ড্রয়ে  গত আসরের রানার্স আপ মুক্তিযোদ্ধাকে এক পয়েন্টে পেছনে ফেলে আবাহনী। ২০ ম্যাচে আবাহনীর সংগ্রহ ৪৫ পয়েন্ট। সমান খেলায় মুক্তিযোদ্ধার সংগ্রহ ৪৪ পয়েন্ট।

আবাহনী কোচ আলী আকবর এই ম্যাচটিকে লিগের সেরা ম্যাচের আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাও ভালো খেলেছে। দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে ম্যাচে। আল্লাহ আমাদের সহায় ছিলেন। আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।’ এবারের লিগ শিরোপাকে নিজ দেশের বিখ্যাত কোচ প্রয়াত নাসির হেজাজীকে উৎসর্গ করেন আলী আকবর। মোহামেডান ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ ছিলেন প্রয়াত এই ইরানি কোচ।

দু’দুবার ম্যাচে এগিয়ে থেকেও ম্যাচ জিততে না পারায় হতাশ মুক্তিযোদ্ধা কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক। তিনি বলেন, ‘ডিফেন্সের সামান্য ভুলে আমরা জয় বঞ্চিত হয়েছি।’

 

খেলাধূলা