প্রতিযোগিতা আইনের সুফল দেখাতে হবে

প্রতিযোগিতা আইনের সুফল দেখাতে হবে

ব্যবসার ক্ষেত্রে ও পণ্যবাজারে সংসদে সম্প্রতি পাস হওয়া প্রতিযোগিতা আইনের সুফল দেখাতে হবে। রমজান উপলক্ষে বরাবরের মতো এবারও দেশের বাজারে অতিরিক্ত পণ্য আমদানি হয়েছে। ছোলা, বুট, তেল, চিনি, মসলার মতো পণ্য অনেকেই মজুদ করেছেন। তাই ভোক্তাদের স্বার্থে প্রতিযোগিতা আইনের সুফল দেখাতে হবে।

সোমবার রূপসী বাংলা হোটেলে ‘বাংলাদেশে প্রতিযোগিতা আইনের অগ্রসরতা: বাস্তবায়নের সম্ভাব্য ক্ষেত্রসমূহ’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

উন্নয়ন সমন্বয় ও কনজ্যুমার ইউনিটি অ্যান্ড ট্রাস্ট সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল (কাটস ইন্টারন্যাশনাল) যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।

প্রসঙ্গত, ব্যবসা-বাণিজ্যে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার জন্য গত ১৭ জুন জাতীয় সংসদে ‘প্রতিযোগিতা আইন-২০১২’ সংসদে পাস হয়। এ আইনে পারস্পরিক যোগসাজশে বাজারে পণ্যের দাম বাড়ালে এখন শাস্তি পেতে হবে। এই আইনে বাজারে সুস্থ প্রতিযোগিতার জন্য ‘বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন’ গঠন করা হবে। কমিশনের আদেশ লঙ্ঘনে এক বছর কারাদণ্ড বা প্রতিদিন ব্যর্থতার জন্যে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।

সেমিনারে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অ্যাপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ মনজুর এলাহী বলেন, ‘আমি ব্যবসায়ী হিসেবে অতীতে দেখেছি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দেশি ব্যবসায়ীদের ব্যবসা প্রসারণে ভূমিকা রাখে না। অনেকভাবে ব্যবসায়ীরা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়েন। বেসরকারি খাতকে এগিতে নিতে সরকারের উদ্যোগ জরুরি।’

বিএনপি দলীয় সাংসদ সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া বলেন, ‘বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছিলেন সিন্ডিকেটের কারণে দ্রবব্যের দাম বাড়ে। আশা করি, এখন আর মন্ত্রীকে এ ধরনের কথা বলতে হবে না। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা ছাড়া লাইসেন্স বাতিল করতে হবে।’

রাজনীতিক শিরীন আখতার বলেন, ‘আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে রাষ্ট্র চেষ্টা করলে এ আইন বাস্তবায়ন হতে পারে। জনগণকে তাদের সমস্যার কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। আইন হলো কিন্ত সাধারণ মানুষ এর ফল কতটুকু পাবে তার ওপর নির্ভর করবে এর সুফল।’

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট আসিফ ইব্রাহীম বলেন, ‘এ আইনের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের গলা টিপে ধরা হবে ভাবলে ভুল হবে। ব্যবসায়ীরাও জনগণের স্বার্থ দেখে।’

ক্যাবের সভাপতি কাজী ফারুক বলেন, ‘সবার জন্য আইন। আশা করি, প্রতিযোগিতা কমিশন নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখবে।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্ট্রি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রায় ২০০ ওষুধ কোম্পানি আছে। এসংখ্যা আরও বাড়ছে। প্রতিনিয়ত ওষুধের দাম বাড়ছে। এক্ষেত্রে আইন কাজ করছে না। আন্তরিকভাবে আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।’

জাতীয় পার্টির সাংসদ টিআইএম ফজলে রাব্বি বলেন, ‘প্রতিযোগিতা আইন অনেক আগেই পাস করা উচিত ছিল। কমিশন গঠনের পর তারা সঠিকভাবে কাজ করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মেদ হেলাল বলেন, ‘রাজনৈতিক সমস্যার কারণে এদেশে কিছুরই সমাধান হয় না। সরকার আইনে বলেছে, ১০ শতাংশের বেশি মুনাফা করা যাবে না। কিন্তু সরকারি এসব কাজে পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল নেই।’

অর্থ বাণিজ্য