বিতর্কিত ‘বিক্রয় কর বৃদ্ধি’ বিলকে কেন্দ্র করে জাপানের রাজনীতিতে নতুন করে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টি অব জাপানের (ডিপিজে) অন্যতম প্রভাবশালী নেতা ইশিরো ওজোয়াসহ ৫০ জন আইন প্রণেতা দল থেকে পদত্যাগ করেন।
‘বিক্রয় কর’ বৃদ্ধি বিল নিয়ে শুরু হওয়া বিতর্কে গত কয়েকদিন ধরেই ক্ষমতাসীন দল থেকে ইশিরো ওজোয়া এবং তার সমর্থকদের দলত্যাগের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিলো। তবে তাদের দলত্যাগের পরও পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা সামান্য ব্যবধানে বজায় রেখেছে জাপানের ক্ষমতাসীন দল ডিপিজে । ফলে আপাতত সরকারের পতন হচ্ছে না বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
ক্ষমতাসীন দলের একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, নিম্নকক্ষের ৩৮ জন এবং উচ্চকক্ষের ১২ জন সদস্য পদত্যাগ পত্র জমা দেন। এর আগে খবর বেরিয়েছিলো মোট ৫২ জন আইনপ্রণেতা তাদের পদত্যাগ পত্র পেশ করেছেন। তবে পরবর্তীতে দু’জন তাদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করেন বলে ক্ষমতাসীন দলের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে।
যদি ক্ষমতাসীন দল থেকে নির্বাচিত নিম্মকক্ষের আরও ৫৪জন আইনপ্রণেতা ওজোয়ার পদক্ষেপ অনুসরণ করে দলত্যাগ করেন, তবে প্রধানমন্ত্রী নোদা পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবেন এবং সংবিধান অনুযায়ী তাকে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিতে হবে।
গত সপ্তাহে জাপানের পার্লামেন্টে পাশ হওয়া বিক্রয় কর বৃদ্ধি সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন ওজোয়া। তবে বিলটি সমর্থন করে জাপানের প্রধানমন্ত্রী নোদা বলেন, দেশের কাঁধে চেপে বসা বিশাল সরকারি ঋণ কমিয়ে আনতে এবং কল্যাণ খাতের তহবিল বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ২০১৫ সালের মধ্যে বিক্রয় কর বর্তমানের ৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১০ শতাংশে উন্নীত করা জরুরি।
কর বৃদ্ধি প্রস্তাব নিয়ে পার্লামেন্টে নিজ দলের মধ্যেই ব্যাপক বিরোধিতার সম্মুখীন হন নোদা। পদত্যাগী নেতা ওজোয়ার নেতৃত্বে তার দলের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এর বিরোধিতা করে এই বিলের পক্ষে ভোটদানে বিরত থাকেন। প্রভাবশালী নেতা ওজোয়া অভিযোগ করেন, নোদা দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রতিকে ভঙ্গ করছেন। ওজোয়াকে গত নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের জয়লাভের কারিগর হিসেবে অভিহিত করা হয়।
উল্লেখ্য, ওজোয়ার জন্য দলত্যাগ নতুন নয়। জাপানের রাজনীতিতে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিককে অনেকে দল ভাঙ্গার কারিগর হিসেবেও অভিহিত করেন। ১৯৯৩ সালেও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে বেরিয়ে এসে নিজের দল গঠন করেন তিনি।
তবে অনেক বিশ্লেষক বলছেন, ওজোয়ার এই পদক্ষেপে ক্ষমতাসীন দল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও রাজনৈতিকভাবে লাভবান হবেন প্রধানমন্ত্রী নোদা। ওজোয়ার দলত্যাগের ফলে ক্ষমতাসীন দলের ওপর এখন থেকে নোদার একচ্ছত্র প্রভাব সৃষ্টি হবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।