স্প্যানিশ লা লিগায় নিজেদের ঘরের মাঠে রিয়াল মাদ্রিদের সবশেষ পরাজয়টি ছিল গত বছরের মে মাসে। সেবার রিয়াল বেটিসের বিপক্ষে ০-২ গোলে হেরেছিল আসরের চ্যাম্পিয়নরা। আর যদি প্রতিপক্ষের নাম হয় কাদিজ, তা হলে শেষ পরাজয়ের জন্য ফিরে যেতে হবে ১৯৯১ সালে।
প্রায় ৩০ বছর আগে ১৯৯১ সালের মার্চে কাদিজের বিপক্ষে লা লিগার ম্যাচে ০-১ গোলে হেরেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। দলটির বিপক্ষে শেষ ২১ ম্যাচে এটিই ছিল তাদের একমাত্র পরাজয়। এর সঙ্গে আবার যোগ করুন, চলতি আসরের লিগে টানা তিন ম্যাচ জয়ের সুখস্মৃতি।
শনিবার রাতে কাদিজের বিপক্ষে ঘরের মাঠের ম্যাচটিতে পরিষ্কার ফেভারিট ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। অনেকে হয়তো ভাবতেও শুরু করেছিল, কত বেশি গোলে জিতবেন করিম বেনজেমা, লুকা মদ্রিচ, সার্জিও রামোসরা। কিন্তু ম্যাচশেষে পুরোপুরি উল্টে গেছে সব ধারণা।
১৪ বছর পর এবারই প্রথম ডিভিশন থেকে লা লিগায় উঠে আসা কাদিজের বিপক্ষে নিজেদের ঘরের মাঠেই হেরে গেছে জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা। পুরো ম্যাচে মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছে রাখলেও, আক্রমণভাগের নিদারুণ ব্যর্থতায় ০-১ গোলের পরাজয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে লা লিগার বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের।
রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে ড্র দিয়ে মৌসুম শুরুর পর টানা তিন ম্যাচে রিয়াল বেটিস, রিয়াল ভায়োদলিদ ও লেভান্তেকে হারিয়ে ফর্মে ফেরার আভাসই দিয়েছিল মাদ্রিদের ক্লাবটি। কিন্তু মাত্র পঞ্চম ম্যাচ খেলতে নেমেই আসরের প্রথম পরাজয়ের স্বাদ পেতে হলো তাদের।
ম্যাচের একদম শুরুতেই রিয়ালের রক্ষণে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড আলভারো নেগ্রেদো। নিজেদের বক্সের মধ্যে বল ক্লিয়ার করতে অহেতুক সময় নষ্ট করছিল রিয়াল মাদ্রিদ। এরই মাঝে সুযোগ বুঝে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন নেগ্রেদো। বল এগিয়ে যাচ্ছিল গোলের দিকে, একদম লাইনের কাছ থেকে সে দফায় দলকে বাঁচান রিয়াল অধিনায়ক সার্জিও রামোস।
তবে এর ১৪ মিনিট পর আর জাল অক্ষত রাখতে পারেনি রিয়াল। আলভারো নেগ্রেদোর বাড়ানো বল ধরে জালের খুব কাছ থেকেই থিবো কর্তোয়াকে পরাস্ত করেন কাদিজের আরেক ফরোয়ার্ড অ্যান্থনি লোজানো। ম্যাচের শুরুর দিকেই গোল পেয়ে রীতিমতো উড়তে শুরু করে কাদিজ।
এই গোলের মিনিট দুয়েক আগে কর্তোয়া দুর্দান্ত একটি শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়েছিলেন। পরে যা হয়ে যায় ম্যাচের নিয়মিত চিত্র। বল দখলের লড়াইতে অনেক এগিয়ে থাকলেও সে অর্থে আক্রমণ করতে পারছিল না রিয়াল। অন্যদিকে হুটহাট বল পায়ে নিয়ে কর্তোয়ার কঠিন পরীক্ষা নিয়েছে কাদিজ।
পুরো ম্যাচে অন্তত ৪ বার কাদিজের প্রায় নিশ্চিত গোল ঠেকিয়েছেন রিয়ালের বেলজিয়ান গোলরক্ষক কর্তোয়া। এসব প্রচেষ্টার অন্তত ২টিও যদি গোল হয়ে যেত, তাহলে রীতিমতো লজ্জায়ই পড়তে হতো রিয়াল মাদ্রিদকে। গোলরক্ষকের কল্যাণে এটির হাত থেকে রক্ষা পায় লা লিগার ৩৪ বারের চ্যাম্পিয়নরা।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর আগে একসঙ্গে চারটি পরিবর্তন করেন রিয়াল কোচ জিদান। যা তাদের খেলায় খানিক গতি বাড়ালেও কাজের কাজ গোল এনে দিতে পারেনি। এর মধ্যে ছিল ভিনিসিয়াস জুনিয়রের সহজ সুযোগ মিসের ঘটনা এবং করিম বেনজেমার প্রচেষ্টা ক্রসবারে লেগে ফিরে আসা। যার ফলে সমতাসূচক গোল আর পাওয়া হয়নি রিয়ালের।