গত বছরের ফুকুশিমা ট্রাজেডির পর বন্ধ করে দেওয়া পারমাণবিক চুল্লিগুলোকে পুনরায় চালু করতে যাচ্ছে জাপান। বন্ধ করে দেওয়া চুল্লিগুলোর মধ্যে প্রথম চুল্লি হিসেবে ওহি শহরের নিকটবর্তী পরমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিন নম্বর চুল্লিটি চালু করা হবে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম। এর ধারাবাহিকতায় একই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চার নম্বর চুল্লিটিও চালু করা হবে বলে জানা গেছে।
ফুকুশিমা ট্রাজেডির পর জাপানের ৫০টি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সবগুলোকেই পর্যায়ক্রমেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, গত বছর ভয়াবহ সুনামি ও ভূমিকম্পের কারণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় জাপানের ফুকুশিমায় অবস্থিত পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের চেরনোবিলে সংঘটিত পরমাণু বিপর্যয়ের পর এই দুর্ঘটনাকে সবচেয়ে মারাত্মক হিসেবে অভিহিত করা হয়।
পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়ায় চলতি গরম মৌসুমে ভয়াবহ বিদ্যুৎ সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে জাপান। বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে বর্তমানে জাপানের অর্থনীতি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন। অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটাতে পরমাণু চুল্লিগুলো পুনরায় চালুর জন্য গত মাসে জনগণের কাছে সমর্থন কামনা করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী নোদা। দেশের বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য এই চুল্লিগুলো পুনরায় চালু গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ওহির তিন নম্বর চুল্লির পরিচালনা কর্তৃপক্ষ কানসাই ইলেক্ট্রিক পাওয়ার কোম্পানি কেপকো জানিয়েছে পুনরায় চালু হতে যাওয়া চুল্লি থেকে আগামী বুধবার জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুত সরবরাহ শুরু হবে। এছাড়া চার নম্বর চুল্লিটি আগামী ১৪ জুলাই চালু করা হবে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে জনমনে সৃষ্ট উদ্বেগের ব্যাপারে জাপান সরকার আশ্বস্ত করে বলেছে চালু হতে যাওয়া চুল্লিগুলো পরিবেশের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ।
জাপান সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে দেশটির ব্যবসায়ীরা। বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে তাদের ব্যবসা বাণিজ্য সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এদিকে পরমাণু চুল্লি নতুন করে চালুর বিরুদ্ধে শত শত প্রতিবাদকারী পরমাণু প্লান্টটির নিকবর্তী শহর ওহিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এছাড়া গত শুক্রবারও হাজারখানেক পরমাণু চুল্লিবিরোধী বিক্ষোভকারী রাজধানী টোকিওতে প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিকো নোদার সরকারি বাসভবনের বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় তারা পরমাণু চুল্লি চালু নয় শীর্ষক সেøাগান দেয়।