দুই দশক পর মিয়ানমারে মার্কিন রাষ্ট্রদূত

দুই দশক পর মিয়ানমারে মার্কিন রাষ্ট্রদূত

এশিয়া বিশেষজ্ঞ ডেরেক মিশেলকেই মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত করেছে মার্কিন সিনেট। গত শুক্রবার সিনেট যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া বিষয়ক ঝানু এ নীতি নির্ধারককে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়।

সাম্প্রতিক মিয়ানমারে রাজনৈতিক সংস্কারের প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘ ২২ বছর পর দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক পুনস্থাপনের অংশ হিসেবে রাষ্ট্রদূত নিয়োজিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সুপরিশকৃত ব্যক্তিই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশে কূটনীতি হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন।

গণতান্ত্রিক সংস্কারের পথে চলা মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার নেতৃত্ব দিতে ডেরেকের নাম বিনা বিতর্কে সিনেটে অনুমোদন পায়। এশিয়ার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করছেন ডেরেক। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারের রাজনৈতিক ইতিহাস এবং ক্রমবিবর্তন তিনি খুব ভালভাবে বোঝেন। আর এ কারণে এদেশে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে আশা করছে ওবামা সরকার।

মিয়ানমারে সামরিক শাসন কায়েম হলে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ভারতসহ অনেক দেশ সেনা সরকারের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে। ১৯৮৮ সালে মিয়ানমারে গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলন এবং ১৯৯০ সালে অং সান সু চির দল নির্বাচনে জয় পেলেও সামরকি জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানালে দূতাবাস বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

তবে সম্প্রতি সাবেক জেনারেল প্রেসিডেন্ট থেইন সিনের নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক সংস্কার, রাজনৈতিক বন্দি মুক্তি এবং সু চির দলকে মূলধারার রাজনীতিতে ফেরার অনুমতি দেওয়ায় মিয়ানমারের ব্যাপারে অনেক নমনীয় হয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব। আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন মিয়ানমারের প্রতি এখন সবাই আগ্রহ দেখাচ্ছে।

এদিকে মিয়ানমারের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেখানে বিনিয়োগ এবং আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যারের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

গত বুধবার ডেরেকের নাম চূড়ান্ত করার ব্যাপারে সিনেটে অনুষ্ঠিত শুনানিতে সিনেটররা মিয়ানমারে মার্কিন কোম্পানিকে বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়ার জন্য ওবামা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। তারা বলেন, মিয়ানমারে অবরোধ শিথিল করার অংশ হিসেবে মার্কিন জ্বালানি কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়া উচিৎ। তা না হলে মিয়ানমারে মার্কিন কোম্পানি অন্য বিদেশি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

শুনানিতে ডেরেক বলেন, মিয়ানমারের তেল এবং গ্যাস ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে এ শিল্পে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি নিয়ে সিনেটরদের মতো একই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।

অবশ্য মিয়ানমারের সংস্কার প্রক্রিয়া আর পেছন ফেরার মতো নয় বলে মন্তব্য করেছেন ডেরেক। কিন্তু কারাগারে আটক কয়েকশ’ রাজনৈতিক বন্দিকে নিয়ে উদ্বেগ রয়েই গেছে বলে উল্লেখ করেন ডেরেক মিশেল।

আন্তর্জাতিক