ভারতের রকেট ও স্যাটেলাইট শিল্প ব্যক্তি মালিকানায় যাবে!

ভারতের রকেট ও স্যাটেলাইট শিল্প ব্যক্তি মালিকানায় যাবে!

রকেট ও স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে গত এক দশকে কয়েকটি প্রকল্প সফলভাবে সম্পন্ন করার পর এখন এ ধরনের প্রকল্পে বেসরকারি সহায়তা বাড়ানোর চিন্তা করছে ভারত। ভারতের স্পেস রিসার্চ অরগানাইজেশন (আইএসআরও) রকেট উৎক্ষেপণ এবং কৃত্রিম উপগ্রহ নির্মাণের দায়িত্ব দেশীয় বেসরকারি কোম্পানিকে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

আইএসআরও পরিচালিত পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল (পিএসএলভি)  (এক ধরনের রকেট) এযাবত ধারাবাহিকভাবে ২০ বার সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এ ধরনের একটি উচ্চ প্রযুক্তির দুনিয়ায় এবার ব্যক্তি উদ্যোক্তাদের অংশ গ্রহণ কামনা করছে ভারত।

বর্তমানে দেশটির রকেট নির্মাণে ৮০ শতাংশ যন্ত্রাংশই আসে বেসরকারি কারখানা থেকে। এখন আইএসআরও’র বর্তমান চেয়ারম্যান কে রাধাকৃষ্ণান এবং ব্যবস্থাপক ব্যাঙ্গালোরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকলে খুব শিগগির ভারতের ব্যক্তি উদ্যোক্তা ও শিল্পপতিরাই রকেট বানাবেন এবং আকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মতো জটিল ও ব্যয়বহুল কাজটি করবেন।

এ ব্যাপারে রাধাকৃষ্ণান বলেন, “পিএসএলভি একটি নির্ভরযোগ্য আকাশ যান। মহাকাশে ভারতীয় স্যাটেলাইট স্থাপনে এবং আন্তর্জাতিক বাজারের এর একটা মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান রয়েছে। তবে সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য এমন আরো পিএসএলভি নির্মাণের প্রয়োজন আছে। বর্তমানে ৪শ’রও বেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। এখন ভারতের মহাকাশ শিল্পপ্রতিষ্ঠানই এ মহাকাশ যানের সম্পূর্ণ নির্মাণের দায়িত্ব নিতে পারে কি না ভেবে দেখা যেতে পারে।”

উল্লেখ্য, এক একটি পিএসএলভি নির্মাণে খরচ হয় ১২০ কোটি রুপি। আর আইএসআরও তাদের সামর্থের মধ্যে এ যান বছরে সর্বোচ্চ চারটি তৈরি করতে পারে। আগামী দুই তিন বছরের মধ্যে ১২টির মতো পিএসএলভি উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা রয়েছে। সুতরাং এতো কম সময়ের মধ্যে প্রয়োজন মেটাতে আইএসআরও এ দায়িত্ব ব্যক্তি মালিকানা কোম্পানির হাতে ছেড়ে দিতে চাচ্ছে।

এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অন্ধ্রপ্রদেশে মহাকাশ বন্দরখ্যাত শ্রীহরিকোটায় ২শ’ ৫০ একরজুড়ে একটি ‘স্পেস পার্ক’ স্থাপন করা হবে। এখানে ব্যক্তিগত উদ্যোক্তারা ভারতের মহাকাশ শিল্পকে উন্নয়নে কাজ করবে।

একই সঙ্গে বর্তমান চাহিদার কথা মাথায় রেখে যোগাযোগ স্যাটেলাইট বাণিজ্যিকখাতে দেওয়ার চিন্তা ভাবনা করছে আইএসআরও। তারা বলছে, বেসরকারি কোম্পানিগুলোর সহায়তায় এ শিল্প ব্যাপকভাবে লাভবান হতে পারে এবং জাতীয় চাহিদা পূরণে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার রাখতে পারে।

প্রসঙ্গত, মহাকাশ শিল্পে এখন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য হয় ১৭ হাজার ৭শ’ কোটি ডলার। দিন দিন এ ব্যবসার প্রসার আরো বাড়ছে। সুতরাং এতোবড় একটা শিল্পের অংশীদার হওয়া থেকে বঞ্চিত হতে চায় না ভারত।

আন্তর্জাতিক