চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে (সিসিসি) ২০১২-১৩ অর্থবছরের জন্য ৯৬০ কোটি ৫২ লাখ ৭০ হাজার টাকার বাজেট ঘোঘণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সিটি কর্পোরেশন মিলনায়তনে এ বাজেট তুলে ধরেন করেন মেয়র এম মনজুর আলম।
বাজেটে অনাদায়ী বকেয়া কর থেকে আয় ধরা হয়েছে ৪৩০ কোটি দুই লাখ দুই হাজার টাকা। গত বাজেটে এ খাত থেকে আয় ধরা হয়েছিল ৩৫২ কোটি ৮৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা যার বিপরীতে আয় হয়েছে মাত্র ৩৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
বৃহস্পতিবার নতুন অর্থবছরের বাজেট ছাড়াও ২০১১-১২ অর্থবছরের ৩৬০ কোটি ২৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেটও উপস্থাপন করা হয়। ওই অর্থবছরের জন্য মেয়র মনজুর আলম ৯১৫ কোটি ১৫ লাখ ৬১ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করেন।
এবারের বাজেটে অনাদায়ী বকেয়াকর ছাড়াও হাল ও অভিকর এবং অন্যান্য কর ও ফিস থেকে আয় ধরা হয়েছে ২২১ কোটি ৬৭ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ২০১১- ২০১২ অর্থবছরের বাজেটে এ খাত থেকে আয় ধরা হয়েছিল ২২৬ কোটি ৩৪ লাখ ২১ হাজার টাকা যার বিপরীতে আয় হয়েছে ১৪৮ কোটি ৯৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
ঘোষিত বাজেটে উন্নয়ন অনুদান বাবদ ২১৩ কোটি টাকা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয় দেখানো হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য উৎস থেকে ২৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা আয় দেখানো হয়।
ঘোষিত বাজেটে নগরীর উন্নয়ন খাতে সর্বোচ্চ ৪৮৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। গতবারের বাজেটে ৪৪৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা উন্নয়ন খাতে ব্যয় ধরা হলেও খরচ করা হয়েছে ১০৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেটে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ ১৪০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে যা ব্যয়ের দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ।
বাজেট উত্থাপন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মেয়র মনজুর আলম বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আয়-ব্যয়ের ব্যবধান হ্রাস করে কোষাগার ঘাটতিকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা। পাশাপাশি উন্নয়নের বিকাশ ঘটিয়ে নগরীকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ, বাসযোগ্য ও শান্তির নগরীতে রূপান্তর করা।
নগরীর জলাবদ্ধতা নিয়ে মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি কর্পোরেশন গত দুই বছর বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এর মধ্যে নগরীরর প্রধান ১৬টি খাল সাড়ে তিন ফুট করে খনন প্রায় শেষ হয়েছে।
এছাড়া নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের প্রায় ৪১৮ কিলোমিটার নালা-নর্দমা থেকে মাটি উত্তোলনের কাজও শেষ হয়েছে বলে জানান তিনি।
মেয়র বলেন, নগরীর পাহাড়গুলো বালি মাটির। একারণে বৃষ্টির সময় পাহাড় থেকে ধুয়ে আসা বালিতে খালগুলো আবার ভরাট হয়ে যায়।
নগরীরর ড্রেনগুলোর পানি নিষ্কাশন ক্ষমতা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর জন্য নতুন খাল খনন প্রয়োজন।
১৯৯৯ সালের মাস্টার ড্রেনেজ প্ল্যান বাস্তবায়ন জরুরি মন্তব্য করে এটি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের সহায়তা চান তিনি।
মেয়র বলেন, ২৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্ল্যানের আলোকে কর্পোরেশনের উদ্যোগে বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া খাল থেকে বলিহাটের কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত তিন কিলোমিটার নতুন খাল খনন করা হবে।
“এটি বাস্তবায়িত হলে মুরাদপুর, বহদ্দারহাট এলাকার জলাবদ্ধতা শতকরা ৫০ ভাগ কমে যাবে।”
বাজেট অধিবেশনে কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগম, প্রধান হিসাব কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র নাথ, অর্থ ও সংস্থাপন কমিটির সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম, সিটি কর্পোরেশনের সচিব মো. শামসুদ্দোহা, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা দীপক চক্রবর্তী এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।