প্রধান বিরোধীদল বিএনপির অনুপস্থিতিতেই জাতীয় সংসদে ২০১২-১৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পাস হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে স্পিকার আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকে এক লাখ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকার এই বাজেট প্রস্তাব কণ্ঠভোটে পাস হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও উপস্থিত ছিলেন।
এটি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের চতুর্থ এবং সরকারের মেয়াদের শেষ ‘পূর্ণাঙ্গ’ বাজেট।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ২০১২-১৩ অর্থ বছরের জন্য ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৯৯ কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা চেয়ে ‘নির্দিষ্টকরণ বিল- ২০১২’ উত্থাপন করলে তা গৃহীত হয়।
এই বিলের মাধ্যমে ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থ বছর শুরু হবে এবং নতুন বাজেট কার্যকর হবে।
এর আগে সংসদে ৫৬টি মঞ্জুরি দাবি উত্থাপিত হয়। ছাঁটাই প্রস্তাবের সংখ্যা ছিল ৮১১টি। তবে বিরোধী দল অনুপস্থিত থাকায় তাদের আনা ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো সংসদে উত্থাপিত হয়নি।
কেবল স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ফজলুল আজিমের আনা ৮টি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। তবে তার কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়নি।
এবার মূল বাজেটের আকার ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। এতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বরাদ্দ (এডিপি) ধরা হয়েছে ৫৫ হাজার কোটি টাকা। আর সব মিলিয়ে অনুন্নয়ন ব্যয়ের পরিমাণ এক লাখ ১১ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা।
বাজেটের এক লাখ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা ব্যয় মেটাতে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ৩৯ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। বিদেশি অনুদান প্রাপ্তির আশা করা হয়েছে ছয় হাজার ৪৪ কোটি টাকা। বাকি ঘাটতি ৪৬ হাজার ২৪ কোটি টাকা দেশি-বিদেশি উৎস থেকে ঋণ হিসাবে সংগ্রহ করবে সরকার।
এই ঋণের মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাত থেকেই সরকার ৩৩ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা ঋণ করতে চায়। যার মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে নেওয়া হবে ২৩ হাজার কোটি টাকা। বাকি ১০ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা নেওয়া হবে মূলত সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে।
আর বিদেশি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা।
বাজেট ব্যয়ের বাইরে সরকারের বিভিন্ন ধরনের সংযুক্ত দায় মিলিয়ে মোট দুই লাখ ৮৩ হাজার ৫৯৯ কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার ‘নির্দিষ্টকরণ বিল’ সংসদে কণ্ঠভোটে পাস করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত ৭ জুন নতুন অর্থবছরের এই বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। সেদিনও বিএনপির সংসদ সদস্যরা অধিবেশনে ছিলেন না।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের গত তিনটি বাজেট অধিবেশনেও বিরোধী দল সংসদে যায়নি।
এবার বাজেটের ওপর ৫০ ঘণ্টারে বেশি সময় আলোচনা করেছেন সাংসদরা।
বুধবার অর্থবিল পাসের মধ্যে দিয়ে বাজেটের কর ও শুল্ক আরোপ এবং এ সংক্রান্ত আইনের সংশোধনী অনুমোদন করা হয়।