দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে ২০১১-১২ চলতি অর্থবছরে রাজস্ব বোর্ডের বেঁধে দেওয়া টার্গেট পূরণে ব্যর্থ হয়েছে কাস্টমস কর্মকর্তরা। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ ১৯৪ কোটি টাকা।
জানা গেছে, অর্থবছরের শুরুতে বেনাপোল স্থলবন্দর কাস্টমসকে টার্গেট দেওয়া হয়েছিল ২ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা। অবশেষে ২৮ জুন সন্ধ্যা পর্যন্ত চলতি অর্থবছরে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে মাত্র ২ হাজার ২৮১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। যেখানে ঘাটতি ১৯৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
তবে টার্গেট পূরণের জন্য গত এক সপ্তাহ ধরে কাস্টমস কর্মকর্তারা বিভিন্ন সিআরএফ ব্যবসায়ীদের কাছে রাজস্ব পরিশোধ করে পণ্য ডেলিভারি নেওয়ার জন্য চাপ দেন।
এ বিষয়ে কাস্টমস সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পিএসআই কোম্পানির মাধ্যমে সিআরএফ না করে আন্ডার ইনভয়েজে অবৈধ পণ্য চালান আমদানি বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
এর নেপথ্যে রয়েছে ব্যবসায়ী নামধারী বৈদেশিক মুদ্রা পাচার সিন্ডিকেট। অ্যাসোটেড গুডসের নামে ইমিটেশন জুয়েলারিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণে শুল্ক ফাঁকির পাশাপাশি দেশের কষ্টার্জিত কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা পাচার করছে সংঘবদ্ধ এ চক্রটি।
সূত্র আরও জানায়, ইমিটেশন জুয়েলারি বাধ্যতামূলক সিআরএফ করানোর সরকারি নিয়ম থাকলেও তা পালন করা হয়নি।
নিয়ম অনুযায়ী ইমিটেশন পণ্যের চালান সিআরএফ করা হলে প্রতি কেজির গড় মূল্য পড়তো ১০ ডলার। কিন্তু সিআরএফ ছাড়াই ইমিটেশন পণ্য চালান আমদানি করা হচ্ছে এক ডলারেরও কম মূল্যে।
কাস্টমস কর্মকর্তারা এ দণ্ডযোগ্য অপরাধ বন্ধ না করে নামমাত্র জরিমানা আদায়ের মাধ্যমে আমদানি কারকদের এ লুটপাট বাণিজ্য চালু রেখেছেন।
এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মাসুদ সাদিক জানান, গত বছরের তুলনায় এবার বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি কম হয়েছে।
বিশেষ করে উচ্চ শুল্কপণ্য মোটরসাইকেল ও কার আমদানি অনেক কমেছে। টার্গেট অনুয়ায়ী রাজস্ব আদায় অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় এ মাসে রাজস্ব বোর্ড চলতি অর্থবছরে বেঁধে দেওয়া টার্গেট ২ হাজার ৪৭৫ কোটি থেকে কমিয়ে ২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা পুনর্নির্ধারণ করে।
এদিকে, রাজস্ব ঘাটতি কিছুটা পূরণের জন্য শনিবার বন্ধের দিন বিশেষ ব্যবস্থায় আমদানি পণ্য খালাসের জন্য কাস্টমস অফিস খোলা রাখার ঘোষণা দিয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে এবার ১শ কোটি টাকার মতো রাজস্ব আয় ঘাটতি থাকতে পারে বলে কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে।