বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৪টার দিকে গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ি উড়ালসেতুর নির্মাণ কাজ করছে শ্রমিকরা। এ সময় শ্রমিকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়। কথা হয় ফ্লাইওভার ও তাদের ব্যক্তিগত কিছু বিষয়েও।
এক পর্যায়ে শ্রমিকদের উদ্দেশে ফ্লাইওভারের নির্মাণ এক বছরের মধ্যে শেষ হবে এমন কথা বললে জবাবে শ্রমিকরা বলেন, ‘পাইলিংয়ের কাজ শেষ হইতেই আরো ছয় মাস লাগবো। এক বছর তো দূরের কথা দেড় বছরে কাজ শেষ হইবে কিনা সন্দেহ আছে।’
মন্ত্রীসহ অনেকে বলছে আগামী বছরের মাঝামাঝি কাজ শেষ হবে। আপনারা বলছেন সময় আরো বেশি লাগবে। কোনটা ঠিক মনে করবো আমরা। এ কথা বলার পর জবাবে তারা বলেন, ‘অনেক দিন কাজ করতাছি। এত দিনের কাজের স্পিড (গতি) হিসেবে কইছি সময় আরো বেশি লাগব। তবে স্যাররা তো বলতাছে কাজ তাড়াতাড়ি শেষ হবে। স্যাররা চেষ্টা করতাছে তাড়াতাড়ি কাজ করার।’
একজন বলে উঠল ভাই কিছু লেইখেন না। আমাগো নাম দিয়েন না।
শ্রমিক সিরাজগঞ্জের হুমায়ন কবীর বাংলানিউজকে জানান, এখানে দুই শিফটে কাজ করে শ্রমিকরা। সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮ টা এক শিফট। রাত ৮ টা থেকে সকাল ৮ টা পর্যন্ত আরেক শিফট। এই ১২ ঘণ্টা কাজের বিনিময়ে শ্রমিক পর্যায়ে ক্যাটাগরি ভিত্তিক ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা বেতন দেওয়া হয়। থাকা কোম্পানির, খাওয়া নিজের।
প্রসঙ্গগত ২০১৩ সালের জুনে এ উড়ালসেতু নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। তবে বিভিন্ন সময় মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা দাবি করেছেন ২০১২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্মাণ শেষ করার লক্ষে কাজ করা হচ্ছে।
এর মধ্যে গত ৯ এপ্রিল বিকেলে সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক সাংবাদিকদের বলেন, ‘চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যেই মেয়র মোহাম্মদ হানিফ (গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী) উড়ালসেতু নির্মাণ শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে।’
এর আগে গত ৬ জানুয়ারি মিরপুরে নির্মাণাধীন একটি ফ্লাইওভারের কাজের অগ্রগতি দেখতে গিয়ে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘আগামী দেড় বছরের মধ্যে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার ও হাতিরঝিল ফ্লাইওভার যখন দৃশ্যমান হবে, তখন রাজধানীতে আর যানজট থাকবে না।’
এদিকে দীর্ঘদিন থেকে চলমান এ উড়ালসড়কে নির্মাণ কাজ চলায় এ এলাকার রাস্তায় তীব্র যানজট লেগেই আছেই। যাত্রাবাড়ি-সায়েদাবাদ, টিকাটুলি এলাকায় যানজটের কারণে ১০ মিনিটের রাস্তা পার হতে কমপক্ষে ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা সময় লাগছে। কখনো দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। ফলে যত তাড়াতাড়ি এ ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ শেষ হবে, জনগণের দূর্ভোগ তত কমবে।
উল্লেখ্য, ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) এই উড়ালসেতুর কাজ শুরু করেছে ২০১০ সালের ২২ জুন। এ উড়ালসেতুর ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ৫৩ কোটি টাকা। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) মাধ্যমে এ প্রকল্পের অর্থায়ন করা হচ্ছে। বেসরকারি অংশীদার হিসেবে অর্থের জোগান দিচ্ছে ওরিয়ন গ্রুপ।