বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, হাঙ্গেরির সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রচুর সুযোগ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে জাপান, ভারত, চীন, কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশ বড়ধরনের বিনিয়োগ করতে এগিয়ে এসেছে। পরিবর্তনশীল বিশ্ববাণিজ্য পরিস্থিতিতে আমেরিকা, জাপানসহ অনেক দেশ তাদের শিল্প-কলকারখানা বাংলাদেশে স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করছে। দেশগুলো বাংলাদেশকে এখন বিনিয়োগের উপযুক্ত স্থান মনে করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (এফডিআই) এ ট্যাক্সসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। প্রায় ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশ পণ্যের একটি বড় বাজার। এখানে হাঙ্গেরি বিনিয়োগ করলে লাভবান হবে।
হাঙ্গেরির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, উভয় দেশের মধ্যে একটি জয়েন্ট ট্রেড কমিশন গঠনের মাধ্যমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের খাতগুলো চিহ্নিত করা সহজ হবে। এগ্রোফুড প্রসেসিং, বিশুদ্ধপানি ব্যবস্থাপনা এবং ফার্মাসিটিকেল সেক্টরে হাঙ্গেরির বিনিয়োগকে বাংলাদেশ স্বাগত জানাবে। এ ছাড়া আইসিটি, সেবাখাতে বিনিয়োগের প্রচুর সুযোগ রয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তাঁর অফিস কক্ষে বাংলাদেশে সফররত হাঙ্গেরির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী পিটার সিজিজারটোর নেতৃত্বে আগত উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সাথে মতবিনিময়ের সময় এসব কথা বলেন।
হাঙ্গেরির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, হাঙ্গেরির ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীগণ বাংলাদেশে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে আগ্রহী। এজন্য একটি জয়েন্ট ট্রেড কমিশন গঠন করা যেতে পারে। বাংলাদেশের স্পেশাল ইকোনমিক জোনে হাঙ্গেরি এগ্রোফুড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিসহ বাংলাদেশের বিশুদ্ধপানি ব্যবস্থাপনা ও ফার্মাসিটিকেল সেক্টরে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। বাংলাদেশের কৃষিভিত্তিক ইন্ডাস্ট্রিতে আধুনিক প্রযুক্তি ও মেশিনারিজ সরবরাহ করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা আকর্ষণীয়, হাঙ্গেরি এসকল সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে চায়।
করোনা মোকাবেলা এবং করোনাকালে রপ্তানি বাণিজ্য এবং অর্থনৈকিত কর্মকাণ্ড সচল রাখার প্রশংসা করে তিনি বলেন, বৈদেশিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক সক্ষমতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় হাঙ্গেরি অংশিদার হতে চায়।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি হাঙ্গেরির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের জবাবে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসনিার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দক্ষতার সাথে সফলভাবে কভিড-১৯ মোকাবেলা করছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক। বাংলাদেশ পৃথিরীর দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানি কারক দেশ। এ সেক্টরে প্রায় ৪৮ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। সরকার এ শিল্পকে সচল রাখতে আর্থিক প্রণোদনা দিয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কলকারখানা চালু রেখে রপ্তানি বাণিজ্য সচল রেখেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন উন্নত দেশের চাহিদা মোতাবেক বিশ্বমানের মাস্ক, পিপিইসহ বিভিন্ন মেডিক্যাল পণ্য রপ্তানি করছে। বাংলাদেশ কভিড-১৯ প্রতিরোধকারী ফ্যাব্রিক তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। বিভিন্ন দেশে এগুলোর চাহিদা বাড়ছে। বাংলাদেশ বিশ্বমানের মেডিক্যাল পণ্য উৎপাদন করে প্রায় ১৪২টি দেশে রপ্তানি করছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. ওবায়দুল আজমসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।