হাতুড়ির আঘাতে গুরুতর আহত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের চিকিৎসার সব ব্যয়ভার বহন করবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি এই পৈশাচিক হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তি দিতে সরকার বদ্ধপরিকর।’ ওয়াহিদা খানম পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তাঁর চিকিৎসার সমুদয় ব্যয়ভার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বহন করবেন বলেও জানান।
গত বুধবার রাত আড়াইটার দিকে একদল দুর্বৃত্ত মই বেয়ে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে প্রবেশ করে। তারা বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা খানমকে হাতুড়ি দিয়ে পেটাতে শুরু করে। এ সময় ইউএনওর চিৎকার শুনে পাশের কক্ষে থাকা তাঁর বাবা ছুটে এসে মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা তাঁকেও আঘাতে জখম করে। পরে কোয়ার্টারের অন্য বাসিন্দারা তাদের চিৎকার শুনে পুলিশকে খবর দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ওয়াহিদা খানমকে ঢাকায় আনা হয়।
দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত ওয়াহিদা খানমের অস্ত্রোপচার গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সম্পন্ন হয়েছে। তাঁকে বর্তমানে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তিনি এখনো শঙ্কামুক্ত হননি। তবে, তাঁর সেরে ওঠার ব্যাপারে আশাবাদী ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
ইউএনও ওয়াহিদা খানমের বাসভবনের নৈশপ্রহরী নাহিদ হোসেন পলাশ ও উপজেলার সিংড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মাসুদ রানাকে আটক করেছে পুলিশ। ঘোড়াঘাট থেকে আজ শুক্রবার সকালে তাঁদের আটক করা হয়েছে বলে জানান ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম।
আটক দুজনের মধ্যে নাহিদ হোসেন পলাশকে তাঁর কর্মস্থল ইউএনওর বাসভবন থেকে আর মাসুদ রানাকে সিংড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ দেবীহাটায় তাঁর বাড়ি থেকে আটক করা হয় বলে জানান ওসি।
এর আগে আজ শুক্রবার ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে হিলির কালিগঞ্জ এলাকা থেকে এ ঘটনার প্রধান আসামি আসাদুল ইসলামকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র্যাবের যৌথ দল। তাঁর বাড়ি ঘোড়াঘাট উপজেলার ওসমানপুরে। এ ঘটনায় অপর একজনসহ সন্দেহভাজন হিসেবে ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করা হয়।