অ্যামেরিকায় আবার বর্ণবাদী পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ-হত্যার ঘটনা সামনে এল। এ বার রচেস্টারে। ঘটনাটি ঘটেছিল মার্চে। এতদিন পরে তাঁকে নির্যাতনের ভিডিও সামনে এসেছে। বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কের মেয়র সাতজন পুলিশকে বরখাস্ত করেছেন।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নগ্ন হয়ে প্রুড রাস্তায় দৌড়চ্ছেন। তখন পুলিশ অফিসাররা তাঁকে ধরেন। তাঁর মুখে ঠুলি পরিয়ে দেয়া হয়। তাঁর মাথা ফুটপাথে দুই মিনিট ধরে চেপে রাখা হয়। পুলিশের দাবি, তিনি যাতে থুথু ফেলতে না পারেন, তার জন্য তারা এই কাজ করেছিল। তারপর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সাতদিন পর তাঁর পরিবার জীবনদায়ী ব্যবস্থা খুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় তাঁর মৃত্যু হয়।
যে সময় ঘটনাটি ঘটে, তখন বিষয়টি নিয়ে কোনও হইচই হয়নি। ভিডিও প্রকাশের পর শুরু হয়েছে। কারণ, ইতিমধ্যে ফ্লয়েড ও ব্লেকের ঘটনা ঘটে গেছে। অথচ, প্রুড মারা গেছেন ফ্লয়েডকে হত্যার দুই মাস আগে। তাঁর দেহ যিনি পরীক্ষা করেছেন সেই চিকিৎসক জানিয়েছেন, এটা খুন। শারীরিক নির্যাতনের প্রতিক্রিয়ায় প্রুড মারা গেছেন।
প্রুড ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁর চিকিৎসা চলছিল। তাঁকে মানসিক হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসার পর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি নগ্ন হয়ে রাস্তা দিয়ে দৌড়তে থাকেন। তাঁর মাসী লেটোরিয়া মুর জানিয়েছেন, ”তাঁর কী মনে হয়েছিল, কেন তিনি দৌড়চ্ছিলেন, কোন পরিস্থিতিতে দৌড়চ্ছিলেন, সে সব আমি জানি না। আমি শুধু জানি, এভাবে পুলিশি অত্যাচার অন্যায়। পুলিশ কেন এ ভাবে তাঁকে হত্যা করবে?”
আর রচেস্টারের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মেয়র লাভলি ওয়ারেন বলেছেন, ”ড্যানিয়েল প্রুডের ঘটনা হলো পুলিশ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, সমাজ এবং আমার নিজের ব্যর্থতা। আমরা কালো মানুষদের জীবন রক্ষা করতে পারছি না।”
কিন্তু ভিডিও প্রকাশে এত দেরি হলো কেন? পুলিশ কর্তারা কি অপরাধীদের বাঁচাতে চাইছিলেন? এই সব প্রশ্ন উঠছে। পুলিশ প্রধান বলেছেন, আমি মানুষের রাগের কারণ বুঝতে পারছি। কিন্তু পুলিশ বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেনি।
বুধবার ভিডিও সামনে আসার পরই বিক্ষোভকারীরা পুলিশ সদরদফতরের সামনে জড়ো হয়। তাঁরা অবিলম্বে দোষী পুলিশের শাস্তি দাবি করে। বিক্ষোভ চলবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।