পাকিস্তানের সমুদ্রসীমায় ২০টি চীনা ফিশিং ট্রলারের আগমনের প্রতিবাদ করবে বলে জানিয়েছে দেশটির জেলেরা। ফিশিং ট্রলারগুলো সিন্ধু ও বালুচিস্তান প্রদেশের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলে মাছ ধরবে বলে জানা গেছে।
পাকিস্তান মৎসজীবী ফোরাম (পিএফএফ) করাচিতে চীনা ফিশিং ট্রলারের আগমনের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ কর্মসূচী ঘোষণা করেছে। পিএফএফ’র মতে, অনিয়ন্ত্রিত মৎস আহরণের ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে মাছের মজুদ এরই মধ্যে গত বছরের তুলনায় ৭২ শতাংশেরও বেশি কমেছে। এখন তারা আশঙ্কা করছে যে চীনা বিশাল আকারের ট্রলারগুলো পাকিস্তানের আর্থনৈতিক অঞ্চলে মৎস আহরণ করলে সামুদ্রিক সম্পদ আরো কমে যাবে।
চীনা ট্রলারগুলো আগস্টের প্রথম সপ্তাহে সিন্ধু এবং বালুচিস্তানের উপকূলে পৌঁছেছে। তবে তারা এখনো মাছ ধরা শুরু করেনি। তারা চীনের কোন অংশ থেকে এসেছে তা জানা যায়নি।
পিএফএফ’র চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আলী শাহ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই ট্রলারগুলো মাছ ধরা শুরু করলে স্থানীয় জেলেরা বঞ্চিত হবে এবং ভবিষ্যতে পরিবেশগতভাবে সমুদ্রকে ধ্বংস করবে। ফলে স্থানীয় জেলেদের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে।’
পিএফএফ’র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অনুসরণ করে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর গোয়াদরের জেলেরাও চীনা ট্রলারগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অভিযানের ঘোষণা দিয়েছে। গোয়াদর হল ৫০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিতব্য চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের একটি অংশ। যা চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের একটি অংশ। অতীতে গোয়াদরের জেলেরা বেল্ট এবং রোড অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল কারণ এটা তাদের সমুদ্রে যেতে বাধা দেয়।
গোয়াদর মৎস্যজীবী জোটের সভাপতি খুদুইদাদ ওয়াজু বলেছেন, ‘চীনা ট্রলারের আগমন স্থানীয় জেলেদের মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করবে। তিনি নিক্কেই এশিয়ান রিভিউকে বলেন, ‘সিন্ধু ও বালুচিস্তানের উপকূলীয় শহরগুলোতে ২৫ লাখেরও বেশি মানুষের রোজগারের অন্যতম উৎস সমুদ্রে মাছ ধরা। নতুন ট্রলারগুলো আমাদের জীবিকা থেকে বঞ্চিত করবে।’
চীনা ট্রলারের আগমন এই এলাকার জেলেদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। তাঁরা বলছেন, গভীর সমুদ্রের চীনা ট্রলারগুলোকে মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া বালুচিস্তানের সমুদ্র তাদের কাছে বিক্রি করার সমান।
সূত্র : এশিয়ান রিভিউ।