পুরান ঢাকার বকশীবাজার ও ওয়ারীতে তাজিয়া মিছিলে ছুরিকাঘাত করে দুজনকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পৃথক ঘটনায় আহত আরো দুজন চিকিৎসাধীন। গত রবিবার সংঘটিত এসব ঘটনায় সন্দেহভাজন কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্ত শেষে পুলিশের ধারণা, গত রবিবার পবিত্র আশুরা উপলক্ষে সড়কে বের হওয়া পৃথক তাজিয়া মিছিল থেকে এসব হামলার ঘটনা ঘটে। ওই মিছিলে লুকিয়ে থাকা স্থানীয় উঠতি বয়সী সন্ত্রাসীরা কৌশলে এসব হামলা চালিয়েছে। তবে কেন এই হামলা তা নিয়ে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) বিপ্লব বিজয় তালুকদার গতকাল সোমবার কালের কণ্ঠকে বলেন, গত রবিবার সকাল থেকে বিকেলের মধ্যে তিনটি এ ধরনের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় সন্দেহভাজন কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
জানা গেছে, রবিবার দুপুর ১টার দিকে বকশীবাজারে তিন রাস্তার মোড় এলাকায় দিনে-দুপুরে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নয়ন (২০) নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়। নিহতের বন্ধু সোহানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বংশাল রূপালী ব্যাংকের গলিতে মোটরসাইকেল মেরামতের একটি দোকানে কাজ করত নয়ন। সেখান থেকে মোটরসাইকেলের মালামাল কিনতে সে বিডিআর সেকশন এলাকায় যাওয়ার জন্য বকশীবাজার মোড়ে এসে একটি রিকশা ডাক দেয়। ওই সময় রাস্তা দিয়ে অন্তত ২০ জনের একটি দল তাজিয়া মিছিল নিয়ে যাচ্ছিল। সে দলের একজন মিছিল থেকে এসে ছুরিকাঘাত করলে নয়ন গুরুতর আহত হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চকবাজার জোনের সহকারী কমিশনার ইলিয়াস হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, নয়নকে হত্যার ঘটনার কিছু ক্লু পাওয়া গেছে। এতে জড়িত এক তরুণকে ধরার চেষ্টা চলছে।
এদিকে রবিবার একই ধরনের আরেকটি ঘটনা ঘটে ওয়ারীতে। সেখানে অজ্ঞাত পরিচয় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয় দুই ভাই মুন্না (১৭) ও শাহিন (১৮)। তাদের দুজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে মুন্নাকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় শাহীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ ছাড়া রবিবার সকালে লালবাগ কেল্লার মোড় এলাকায় বাপ্পী (২০) নামে এক তরুণকে সমবয়সী একজন ছুরিকাঘাত করে। আহত বাপ্পী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। লালবাগ থানার ওসি কে এম আশরাফ বলেন, এ ঘটনায় কয়েক তরুণকে আটক করা হয়েছে। আশা করা যায় দ্রুতই ঘটনার রহস্য জানা যাবে।