টানা তৃতীয় ফাইনালে স্পেন

টানা তৃতীয় ফাইনালে স্পেন

পরপর তিনটি বড় প্রতিযোগিতায় ফাইনালে ওঠার কৃতিত্ব দেখালো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্পেন। বুধবার ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম সেমিফাইনালে পেনাল্টি শ্যুট আউটে লা রোজারা ৪-২ গোলে পর্তুগালকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয়। ম্যাচের নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে কোনো পক্ষই গোল পায়নি।

পেনাল্টি শ্যুট আউটে স্পেনের পক্ষে গোল করেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, জেরার্ড পিকে, সার্জিও র‌্যামোস ও সেস ফ্যাব্রিগাস। নিশানাভেদে ব্যর্থ হন জাভি আলনসো। অন্যদিকে পর্তুগালের পক্ষে গোল করেন পেপে ও নানি। গোল করতে পারেননি জোয়াও মৌতিনহো ও ব্রুনো আলভেস।

দোনেৎস্ক দোনবাস এরিনায় উভয় পক্ষই দলে একটি করে পরিবর্তন নিয়ে মুখোমুখি হয়। সেস ফ্যাব্রিগাস ও ফার্নান্দো তোরেসকে বসিয়ে রেখে ভিনসেন্ট দেল বস্ক মাঠে নামান ‘লাকি বয়’ আলভারো নেগ্রেদোকে। মাঠে যার ১১ উপস্থিতির প্রতিটিতেই জয় পেয়েছে লা রোজারা। ৬ ম্যাচে নিজেও গোল করেছেন। অন্যদিকে পর্তুগাল কোচ পাউলো বেন্তোও দলে একটি পরিবর্তন আনেন। আগের ছয় ম্যাচে খেলা হেলদার পোস্টিগা চোটে থাকায় মাঠে নামেন হুগো আলমেইদাকে।

ময়দানি লড়াইয়ে শুরু থেকেই বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলে পর্তুগাল। প্রথমার্ধে  স্পেন রক্ষণভাগকে ব্যতি-ব্যস্ততার মধ্যেই রাখেন রোনালদো- আলমেইদা- মেইরেলেসরা। ‘বিপজ্জনক’ রোনালদোকে আটকাতে কোচ দেল বস্ক কাজে লাগান রিয়াল মাদ্রিদ সতীর্থ আলভারো আরবেলোয়াকে। যদিও পর্তুগালকে সেমিফাইনালে টেনে আনা রোনালদোকে আটকে রাখা সম্ভব হয়নি। ২৫ মিনিটের মধ্যেই স্পেন পোস্টে দুটি বিপজ্জনক হানা দিয়েছিলেন এই রিয়াল ফরোয়ার্ড। অল্পের জন্য  গোল পাননি। উভয়ক্ষেত্রেই ক্রসবারের ওপর দিয়ে বল পাঠান তিনি। প্রথমাধে আক্রমণ করার চেয়ে সামলাতেই ব্যস্ত থাকে দেল বস্কের শিষ্যরা। অন্যদিকে বিরতির আগে মাত্র দুবার পতুর্গাল পোস্টে হানা দেয় স্পেন। উভয়ক্ষেত্রে গোলপোস্টের ওপর দিয়ে বল উড়িয়ে মারেন যথাক্রমে আরবেলোয়া ও ইনিয়েস্তা।

বিরতির পরও স্পেনকে চাপে রাখে সেলেকাওরা। ৫৭ মিনিটে গোলও পেয়ে পারতো পর্তুগাল। কিন্তু সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা নানি ও রোনালদোকে বল না দিয়ে ৩০ গজ দূর থেকে পোস্টে শট নেন আলমেইদা। তার শট গোলপোস্টের ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ৫৪ মিনিটে নেগ্রেদোকে উঠিয়ে ফ্যাবিগ্রাসকে মাঠে নামান স্পেন কোচ। তবে পর্তুগালকে কখনোই বাগে রাখতে পারেনি স্প্যানিশরা।

৭৮ মিনিটে পর্তুগাল পোস্ট লক্ষ্য করে প্রথম শট নিয়েছিলেন বদলী খেলোয়াড় ফ্যাব্রিগাস। তবে ৩৫ গজ দূর থেকে শটটি নিশানা খুঁজে পায়নি। অন্যদিকে ৮৯ মিনিটে রোনালদো পোস্টের ওপর মেরে সুযোগ নষ্ট করায় অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচ। এ সময়ে ইনিয়েস্তা ও জেসাস নেভাসের দুটি প্রচেষ্টা নস্যাৎ করেন পর্তুগাল গোলরক্ষক রুই প্যাট্রিসিয়া। অতিরিক্ত সময়েও ফলাফল সূচক গোল না আসায় ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ায়।

উভয় পক্ষই পেনাল্টি শ্যুটের প্রথম সুযোগটি নষ্ট করে। প্রথম দুটি স্পট কিক রুখে দেন দুই দলের গোলরক্ষক রুই প্যাট্রিসিয়া ও ইকার ক্যাসিয়াস। তাদের শিকার ছিলেন যথাক্রমে জাভি আলনসো ও জোয়াও মৌতিনহো। আলনসোকে ঠেকিয়ে দেন প্যাট্রিসিয়া। অন্যদিকে মৌতিনহোকে রুখে দেন ইকার ক্যাসিয়াস। এছাড়া পর্তুগালের পক্ষে ব্রুনো আলভেসের নেওয়া চতুর্থ শটটি গোলপোস্টের ফ্রেমে প্রতিহত হয়। স্পেনের পক্ষে পঞ্চম পেনাল্টি কিকটি নেন ফ্যাব্রিগাস। তার শট প্যাট্রিসিয়াকে পরাস্ত করা মাত্রই উৎসবে মেতে ওঠে লা রোজা শিবির।

এই জয়ে ১৯৭০ সালে পশ্চিম জার্মানির পর প্রথম ইউরোপীয় দেশ হিসেবে পরপর তিনটি বৃহৎ আসরের ফাইনালে ওঠে বর্তমান ইউরো চ্যাম্পিয়ন স্পেন।

১ জুলাই কিয়েভে জার্মানি ও ইতালির মধ্যকার সেমিফাইনাল বিজয়ীর মুখোমুখি হবে কোচ দেল বস্কের দল।

 

খেলাধূলা