সকাল থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সেগুনবাগিচার প্রধান কার্যালয়ে মূল গেটের বাইরে সাংবাদিকরা অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু কর্তব্যরত পুলিশ কোনো সাংবাদিককে দুপুর ২টা পর্যন্ত মূল গেটের ভেতরেই প্রবেশ করতে দেয়নি। দুদকে এমন পরিস্থিতি আগে কখনো দেখা যায়নি।
মূল গেটে দায়িত্বপালনরত একজন পুলিশ সদস্য বলেন, “উপরের নির্দেশে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধ।”
দুপুর ২টার পর মূল গেট খোলা হয়। তবে সাংবাদিকের দুদক অফিসের ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি। লিফটে চড়েও যাতে কোনো সাংবাদিক উপরে উঠতে না পারেন সে ব্যাপারে সতর্ক ছিলেন দুদকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দিনভর দুদক অফিসের নিচে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা অপেক্ষায় ছিলেন।
কয়েকজন সাংবাদিক দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান ও কমিশনার শাহাবউদ্দিন চুপ্পু ও মো: বদিউজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতেএচয়েও ব্যর্থ হন। নিচতলায় নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের বাধা দেন।
সাংবাদিকরা কানাডীয় পুলিশের ঢাকা আগমন প্রসঙ্গে এবং ডেসটিনি বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যানের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় “তিনি কোনো কথা বলবেন না।“
বেলা ৪টায় দুদকের একজন কমিশনার গণমাধ্যমের মুখোমুখি হবেন বলে কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তার দেখা পাওয়া যায়নি।
দুদকসূত্র জানায়, তদন্তাধীন বিষয়ে কোনো কথা বলতে নারাজ দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান। এখন থেকে দুদক গোপনীয়তা রক্ষা করে চলবে। দুদক চেয়ারম্যানও কর্মকর্তাদের গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন।
বেলা ৫টায় নিচতলায় সাংবাদিকদের জট দেখে দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) ফররুখ আহমেদ জিজ্ঞেস করেন, “আপনারা এখানে এতক্ষণ কী করছেন? আপনাদের তো কেউ আসতে বলেনি… কিংবা কেউ বক্তব্য দেবে তাও তো বলেনি।”
এ সময় সাংবাদিকরা তাকে বলেন, “দুদক চেয়ারম্যান নিচে নামলে আমরা তার বক্তব্য নেবো, সাংবাদিকদের ভেতরে প্রবেশ বন্ধে কোনো নির্দেশ দিয়েছেন কি-না! দিলেও কেন?”
সাংবাদিকদের দুদক কার্যালয়ে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে বেলা ৫টা ১৯ মিনিটে দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বাংলানিউজকে বলেন, “এটাতো ইনভেসটিগেটিভ এজেন্সি। কিছু নিয়ম কানুন থাকে। এর দ্বার উন্মুক্ত রাখা তো যাবে না।”
তিনি আরও বলেন, “এখানে বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন সেক্টরের তদন্ত হয়। তদন্তের স্বার্থে এখানে সবার সব সময় যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া যায় না।”
উল্লেখ্য, ওয়ান ইলেভেনের সময়ও দুদকের দ্বার উন্মুক্ত ছিল। সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহে কোনো সমস্যা ছিলো না। হঠাৎ দুদকের এ গোপনীয়তা এবং সাংবাদিকদের ভেতরে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে কঠোর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।