প্রবল বর্ষণে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাহাড় ধসের ঘটনায় ১১ জনের লাশ ও ৩ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন দমকল বাহিনীর কর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নগরীর আকবর শাহ মাজার এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। পাহাড়ের পাদদেশে থাকা প্রায় ৩০টি ঘরের ওপর পাহাড় ধসে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছেন।
এ পর্যন্ত শানু (১৬), অজ্ঞাত আরো এক মহিলা ও এক শিশুর লাশ ও ৩ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করছেন চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক রুহুল আমিন।
এদিকে, নগরীর খুলশী থানার বিশ্বকলোনী জয়ন্তিকা আবাসিক এলাকার পাশে ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি পাহাড় ধসে ৩ জন নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন- খালেক (৫৫), রাবেয়া বেগম (৬০) ও মাসুম (২), কুলসুম (৮), রমজান আলী (২৮)।
চট্টগ্রাম বন্দর ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র অফিসার জহিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহমেদ জানান, অনেকের লাশ এখনো মাটির নিছে রয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। আমরা উদ্ধার কাজে অংশ নিতে সেনাবাহিনীকে আহ্বান জানিয়েছি।
চট্টগ্রামের বাঁশখালীকে পাহাড় ধসে একই পরিবারের ৩ শিশু নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৮টায় জঙ্গল শিলকূপ ইউনিয়নে এ দূর্ঘটনা ঘটে।
বাশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির ইকবাল জানান, ভারী বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসে মিনহাজুর রহমানের ৩ শিশু সন্তান নিহত হয়েছে।
নিহতরা হলেন, শহিদুল ইসলাম (১২), খোর্শেদা বেগম (৮) ও ফাতেমা বেগম (৪)।
তিনি বলেন, দূর্ঘটনার পরপরই উপজেলা প্রশাসনন ও সস্থানীয় চেয়ারম্যানের উদ্যোগে মাটি সরিয়ে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।
অন্যদিকে বিকেলে নগরীর নাসিরাবাদ গার্লস স্কুলের পাশে একটি দেয়াল ধসে পড়ে একজন চাপা পড়েন।
চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক জসীম উদ্দিন বলেন, ‘‘নাসিরাবাদে দেয়াল ধসে পড়ার পর সেখানে একজন চাপা পড়েছে বলে জানতে পেরেছি। আমরা উদ্ধারের জন্য যাচ্ছি।’’
এর আগে ভারী বর্ষণের সময় মঙ্গলবার সকালেও নগরীর সুগন্ধা এলাকায় একটি পাহাড় ধসে দু’জন আহত হন। তাদেরকেও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এছাড়া লালখান বাজার বাগঘোনা এলাকার পোড়া কলোনি এলাকায় দুপুরে অপর একটি পাহাড় ধসে ধসে পড়ে। পাহাড়ের খণ্ড বেশ কয়েকটি ঘরের ওপর পড়লেও এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানা গেছে।
এছাড়া সুগন্ধা আবাসিক এলাকায় পাহাড় ধসে একটি প্রাইভেট কার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম মঞ্জুর আলম ও বিভাগীয় কমিশনার সিরাজুল হক খান আকবর শাহ মাজার এলাকায় উপস্থিত রয়েছেন।