গুম মামলা: সামারি কোর্টের প্রস্তাব ফেরালেন আইনমন্ত্রী

গুম মামলা: সামারি কোর্টের প্রস্তাব ফেরালেন আইনমন্ত্রী

হত্যা ও গুম সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে বিরোধী দলীয় সদস্যের সামারি কোর্ট স্থাপনের প্রস্তাব নাকচ করে দিলেন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তরে বিএনপির অনুপস্থিত সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর এক প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়- হত্যা ও গুম অপরাধ সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে সামারি কোর্ট স্থাপন করা হবে কি না।

জবাবে মন্ত্রী বলেন, “সামারি কোর্টের মাধ্যমে হত্যা ও গুম অপরাধ সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তি করার কোন বিধান নেই। কাজেই এ সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিকল্পে দেশে সামারি কোর্ট স্থাপনের কোন পরিকল্পনা সরকারের নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ ফৌজদারি মামলাগুলো মনিটরিং সেলের উদ্যোগে সমন্বয়ের মাধ্যমে দ্রুত নিষ্পত্তিব ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে।”

এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজানের এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার শফিক বলেন, “নি¤œ আদালতসহ বিচার বিভাগের ওপর সরকারের হস্তক্ষেপের কারণে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ভিত্তিহীন। বিচার বিভাগ ও বিজ্ঞ বিচারকরা স্বাধীনভাবে তাদের বিচার কাজ সম্পন্ন করে থাকেন। স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা রক্ষায় সরকার সবসময় সহযোগিতা করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।”

শাম্মী আক্তারের প্রশ্নের জবাবে আইন মন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে উচ্চ আদালতে যে বিচার ব্যবস্থা রয়েছে তা গণমুখী। সাংবিধানিক কাঠামোর আওতায় উচ্চ আদালতে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়ে থাকে। নি¤œ আদালতের বিভিন্ন রায় ও আদেশ দ্বারা কোন ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হলে ওই ব্যক্তি ওউ রায় বা আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল ও রিভিশন মামলা করতে পারেন।”

তিনি বলেন, “সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগ বিভিন্নœ ধরনের রিট মামলা নিষ্পত্তি করে থাকে। উচ্চ আদালতের মামলা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এরইমধ্যে স্বল্প পরিসরে হলেও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে।”

জনপ্রশাসনে বিশৃংখলা নেই

বর্তমানে জনপ্রশাসনে কোন বিশৃংখলা বিরাজ করছে না বলে জানিয়েছেন সংসদ কাজে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

পদোন্নতি, সিনিয়র কর্মকর্তাদের ওএসডি, হয়রানিমুলক বদলি ইত্যাদি কারণে বর্তমানে জনপ্রশাসনে বিশৃংখলা বিরাজ করছে- পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের সূত্র ধরে বিষয়টি সত্য কি না জানতে চান বিএনপির অনুপস্থিত সংসদ সদস্য এ বি এম আশরাফ উদ্দিন নিজান।

সত্য হলে শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেবে কি না জানতে চাইলে জবাবে সৈয়দ আশরাফ বলেন, “বর্তমানে জনপ্রশাসনে কোন বিশৃংখলা বিরাজ করছে না। সরকারের উপ-সচিব ও তদুর্ধ্ব কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য সুনির্দিষ্ট বিধিমালা রয়েছে। পদোন্নতি বিধিমালা ২০০২ অনুযায়ী পদোন্নতি সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করে যোগ্য কর্মকর্তাদের উচ্চতর পদে পদোন্নতি হয়ে থাকে। প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকলে কোন কর্মকর্তার পদোন্নতি না পাওয়াটাই স্বাভাবিক। কোন কারণে যথাসময়ে পদোন্নতি না পেলে পরবর্তী পদোন্নতির পর প্রচলিত বিধি অনুযায়ী তাকে তার কনিষ্ঠ কর্মকর্তার তারিখ থেকে ধারণাগত জ্যেষ্ঠতা দেওয়া হয়।

জনপ্রশাসনে ওএসডি সরকারের একটি রুটিন কাজ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “প্রশাসনিক প্রয়োজনে তিন মাসের অধিক ছুটি, শিক্ষা ছুটি, পিআরএল প্রশিক্ষণ, উচ্চতর পদে পদোন্নতি, বিভাগীয় ও দুর্নীতির মামলা রুজু, ব্যক্তিগত ইত্যাদি কারণে বিভিণœ কর্মকর্তাদের ওএসডি করা হয়। অনুরূপভাবে নিয়োগ/বদলিও সরকারের রূটিন কাজ। কোন কর্মকর্তার একই কর্মস্থলে তিন বছর চাকরি করার সরকারি সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে, যে কোন কর্মকর্তাকে যে কোন সময়ে যে কোন কর্মস্থলে সরকার জনস্বার্থে নিয়োগ/বদলি করতে পারে।”

রাজনীতি