লাশ নিয়ে শালিস বাণিজ্য!

জেলার সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের ভটরকান্দা গ্রামে শিলা রানী (২৫) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা শালিস বাণিজ্য করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয়রা জানান, ৭ বছর আগে সালথা উপজেলার রঘুয়ারকান্দি গ্রামের মৃত জয়দেব মালোর মেয়ে শিলার সঙ্গে ভটরকান্দা গ্রামের নবা মালোর ছেলে কুমারেস মালোর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে প্রায়ই যৌতুকের দাবিতে  শিলাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন স্বামী কুমারেস।

এদিকে, রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভটরকান্দা গ্রামে স্বামীর বাড়িতে নিজেদের ঘরে গলায় রশি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় শিলার লাশ উদ্ধার করা হয়।

শিলার মা মনসা রানীর অভিযোগ, শ্বশুর বাড়ির লোকজন শিলার ঝুলন্ত লাশ নামানোর পর তাকে খবর দেয়।

খবর পেয়ে তিনি সেখানে যাওয়ার পর ঝামেলা এড়াতে ওই দিন রাতেই কুমারেসের পক্ষের মাতবর কাসেম মোল্যা, হাসেম মোল্যা, রাঙ্গা মিঞা ও আমজেদ মেম্বার এবং শিলার পক্ষের মানিক মাতবর, শিলার কাকা রতন কুমার ও আবু মিলে পুলিশকে না জানিয়ে শালিস বৈঠকের মাধ্যমে মৃত্যুর ঘটনাটি মীমাংসা করেন। শালিস বৈঠকে শিলার মায়ের জন্য তার শ্বশুর পক্ষ নগদ ১৮ হাজার টাকা, দেড় ভরি সোনার গহনা ও একটি গরু দেয়।

কিন্তু মীমাংসার জন্য ধার্য করা নগদ টাকাসহ কোনো কিছুই শিলার মাকে না দিয়ে মাতবররা ভাগ করে নেন।

পরে সোমবার বিকেলে শিলা রানীর লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পোড়ানোর জন্য শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে সালথা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ থানায় নিয়ে যায়।

এদিকে, শিলার মা মনসা রানী জানান, শিলাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। শিলাকে তার স্বামী পরিকল্পিতভাবে খুন করেছেন। তিনি তার মেয়ে হত্যার বিচার দাবি করেছেন।

অপরদিকে, মঙ্গলবার সকালে এ ব্যাপারে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফসার উদ্দিন জানান, এখনো পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।

তিনি আরো জানান, সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অন্যান্য