পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর করতে ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক (অবসর গ্রহণ) (বিশেষ বিধান) বিল-২০১২’ সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদের সোমবারের অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন করেন শিক্ষামন্ত্রী নুুরুল ইসলাম নাহিদ। পরে বিলটি ১০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
দেশের ৩৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা সংশোধন করার জন্য এ বিলটি উত্থাপন করা হয়েছে।
এই বিলে বলা হয়েছে, কোনো আইন, অধ্যাদেশ, রাষ্ট্রপতির আদেশ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধি, বিধি, প্রবিধি, উপ-আইন অথবা আইনের ক্ষমতা সম্পন্ন কোনো দলিলে যাই থাকুক না কেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ৬৫ বছর বয়স পূর্তিতে চাকরি হতে অবসর নেবেন।
বর্তমানে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরের বয়সসীমা ৬০ বছর।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, “দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৬৫ বছর করার প্রস্তাব যুক্তিযুক্ত।”
মন্ত্রী জানান, গত ১৮ মে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে উপাচার্যরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর করার প্রস্তাব করলে রাষ্ট্রপতি তাতে একমত হন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “এ বিলের উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে ৩৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৬৫ বছরে করার লক্ষ্যে ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক (অবসর) (বিশেষ বিধান) বিল-২০১২’ ৩৩টি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা সংশোধনী আনার জন্য এ বিল উত্থাপন করা হলো।”
পরে, রাষ্ট্রীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি এবং চাকরির শর্ত নির্ধারণের জন্য জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য ‘পণ্য উৎপাদনশীলতা রাষ্ট্রীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান শ্রমিক (চাকরির শর্তাবলী) বিল- ২০১২’ সংসদে পাস হয়েছে।
এই বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হওয়ায় এখন পণ্য উৎপাদনশীল রাষ্ট্রীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান শ্রমিক (চাকরির শর্তাবলী) অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত হলো।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই বিলটি পাসের জন্য উত্থাপন করেন। এই বিলের ওপর জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত এক বিবৃতিতে খোন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য ২০০৬ সালে একটি মজুরি কাঠামো ‘পণ্য উৎপাদনশীল রাষ্ট্রীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান শ্রমিক (চাকরির শর্তাবলী) আইন-২০০৬’ প্রবর্তন করা হয়েছিল।
“ওই মজুরি কাঠামো শ্রমিকদের চাহিদা পুরণে যথেষ্ট নয়। এজন্য সরকার নতুন মজুরি কাঠামো প্রবর্তনের প্রয়োজন অনুভব করে এবং এ উদ্দেশ্যে জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন গঠন করে।”
তিনি বলেন, “সরকারের কাছে কমিশন যে সুপারিশ দেয়, তা মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। ওই সময় সংসদ অধিবেশন না থাকায় সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রপতি গত ২ মে পণ্য উৎপাদনশীল রাষ্ট্রীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান শ্রমিক (চাকরির শর্তাবলী) অধ্যাদেশ ২০১২ জারি করেন।”
সংবিধানের ৯৩(২) অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী কোনো অধ্যাদেশ জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনের প্রথম ৩০ দিনের মধ্যে পাস করে আইনে পরিণত করতে হবে। এজন্য এই বিলটি পাস করা হয়।