গত মাসেই পালিত হয়েছিল তাঁর ১০১তম জন্মতিথি । মাস ঘুরতে না ঘুরতেই চলে গেলেন ভারতীয় নৃত্যের কিংবদন্তী শিল্পী অমলা শঙ্কর ।
১৯১৯ সালের ২৭ জুন তাঁর জন্ম । অমলা শঙ্করের প্রতিভার বিচ্ছুরণ তাঁর কৈশোর থেকেই। ১৯৩১ সালে মাত্র ১১ বছর বয়সে তিনি অংশগ্রহণ করেন প্যারিসের ইন্টারন্যাশনাল কলোনিয়াল এক্সিবিশনে। ওই সময়েই শঙ্কর পরিবারের সঙ্গে তাঁর আলাপ। তখনও ফ্রক পরতেন শিল্পী। দূরদর্শনে বহু পুরনো একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর স্বামী, কিংবদন্তি নৃত্যগুরু উদয় শঙ্করের সঙ্গে যখন তাঁর আলাপ হয়, তখনও তিনি ফ্রক-পরিহিতা।
অমলার বাবা অক্ষয় নন্দী কলকাতার একজন নামী গয়না ব্যবসায়ী ছিলেন৷ ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে অমলা শঙ্কর এবং তাঁর বাবা প্যারিসে গিয়েছিলেন ৷ সেখানে সে সময় পারফর্ম করতে গিয়েছিলেন উদয় শঙ্করও । সেখানেই আলাপ অমলার সঙ্গে । জীবনটাই বদলে গেল কিশোরী অমলার ।
তার কিছুদিন পরেই তিনি উদয় শঙ্করের কাছে তালিম নিতে শুরু করেন। তাঁর ডান্স গ্রুপের সঙ্গে কিশোরী অমলাও ঘুরে বেড়াতে থাকেন দেশ-বিদেশ। একদিন রাতে হঠাৎই তাঁর ঘরে এসে বিয়ের প্রস্তাব দেন উদয় শঙ্কর এবং সেই কথার আকস্মিকতায় কেঁদে ফেলেছিলেন ১৯ বছরের তরুণী অমলা। বিয়ে হয় ১৯৪২ সালে। সেই বছরই ডিসেম্বরে জন্মগ্রহণ করে তাঁদের প্রথম সন্তান আনন্দ শঙ্কর। আর কন্যা মমতা শঙ্করের জন্ম হয় ১৯৫৫ সালের জানুয়ারিতে।
গত শতাব্দীর চারের দশক থেকেই উদয় শঙ্কর ও অমলা শঙ্কর জুটি হয়ে ওঠে পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী-দম্পতিদের অন্যতম। ১৯৭৭ সালে প্রয়াত হন উদয় শঙ্কর। পরবর্তী সময়ে তাঁদের নৃত্যের ধারা বয়ে নিয়ে চলেছেন কন্যা মমতা শঙ্কর এবং পুত্রবধূ তনুশ্রী শঙ্কর।
কিন্তু প্রখ্যাত এই নৃত্যশিল্পীর মৃত্যু যেন নৃত্য জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি । তাঁর সঙ্গে সঙ্গেই চলে গেল একটা যুগ, একটা অধ্যায়ের উপাখ্যান । প্রকৃতই নক্ষত্র পতন ।