পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজ টেলিফোন করে কিছু বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলে দুই দেশের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা খবর দিয়েছে।
বার্তা সংস্থা বাসস জানিয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করে ইমরান খান বাংলাদেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতির খবর জানতে চান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব ইহসানুল করিমকে উদ্ধৃত করে বাসস জানায়, দুপুর একটা নাগাদ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ফোন করেন এবং জানতে চান যে ঠিক কীভাবে তাঁর সরকার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে।
দুই প্রধানমন্ত্রীর পনেরো মিনিট ধরে চলা টেলিফোন আলোচনার সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা এবং করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সে সম্পর্কে ইমরান খানকে বিস্তারিতভাবে জানান।
বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা সে সম্পর্কেও পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন বলে জানান মি. করিম।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস অব পাকিস্তান বা এপিপি দুই প্রধানমন্ত্রীর টেলিফোন আলোচনা সম্পর্কে আরেকটু বিস্তারিতভাবে জানিয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।
ওই খবরে বলা হয়েছে, আলোচনার সময় ইমরান খান উল্লেখ করেন যে পারস্পরিক বিশ্বাস, পারস্পরিক সম্মান এবং সার্বভৌম সমতার ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বমূলক সম্পর্ক গভীর করতে পাকিস্তান প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এ সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখতে তাঁর দেশের গুরুত্ব দেয়ার বিষয়টি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে জানান।
এপিপি’র খবরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এ সময় নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ এবং দুই দেশের মানুষের মধ্যে সংযোগের স্থাপনের গুরুত্বের বিষয়টিও তুলে ধরেন।
বার্তা সংস্থাটি বলছে, সার্কের প্রতি পাকিস্তানের সমর্থনের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গুরুত্বারোপ করেছেন যে দুই দেশ (পাকিস্তান ও বাংলাদেশ) যৌথভাবে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই শান্তি ও উন্নয়ন অর্জনের জন্য কাজ করতে পারে।
ইসলামাবাদ থেকে পাঠানো এপিপি’র খবরে আরও বলা হয়, কোভিড-১৯ রোগে বাংলাদেশের মানুষের প্রাণহানীতে ইমরান খান দুঃখ প্রকাশ করেন এবং করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে শেখ হাসিনার সরকারের নেয়া পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।
তিনি সাম্প্রতিক বন্যায় বাংলাদেশে প্রাণহানীতে সহানুভূতি প্রকাশ করেন।
এপিপি বলছে, টেলিফোন আলাপের সময় ইমরান খান “ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের গুরুতর অবস্থা নিয়ে পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন” এবং একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধশালী অঞ্চল গড়ে তুলতে জম্মু ও কাশ্মীর সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাকিস্তান ভ্রমণের জন্যও পুনরায় আমন্ত্রণ জানান ইমরান খান।
কুটনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বেশ কয়েক বছর ধরেই অবনতিশীল রয়েছে।
বিশেষ করে বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের প্রকাশ্য অবস্থান এবং বিচারের বিরোধীতা করায় দুই দেশের সম্পর্ক একবারে তলানীতে পৌঁছায় বলে তারা মনে করেন।