রাজধানীর হাতিরপুলের নিজ বাসায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিস্ফোরণে এক চিকিৎসক দম্পতি দগ্ধ হয়েছেন। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দিনগত রাতে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক দম্পতির স্বজনরা।
অগ্নিদগ্ধ ডা. রাজিব ভট্টাচার্য (৩৬) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক এবং তার স্ত্রী ডা. অনূসূয়া ভট্টাচার্য (৩২) শ্যামলী সেন্ট্রাল মেডিকেল চক্ষু বিভাগের রেজিস্ট্রার।
স্বজনরা জানান, রাজিবের বাড়ি কুমিল্লা দেবীদ্বার উপজেলার ইস্টগ্রামে। একমাত্র মেয়ে রাজশ্রী ভট্টাচার্যকে (৫) নিয়ে হাতিরপুল ইস্টার্ন প্লাজার পিছনের একটি বাড়ির ৩য় তলায় ভাড়া থাকেন। তার বাবার নাম লক্ষ্মণ ভট্টাচার্য। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে রাজিব সবার ছোট। আর অনূসূয়ার বাড়ি সিলেট।
বুধবার (২২ জুলাই) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, রাজিবের শ্বাসনালীসহ শরীরের ৮৭ শতাংশ ও আর তার স্ত্রীর ২০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। রাজিবকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়েছে। তার অবস্থা শঙ্কটাপন্ন। স্ত্রীর অবস্থাও গুরুতর। যতটুকু শুনেছি বাসার ভেতর হ্যান্ড সেনিটাইজার আগুনের সংস্পর্শে এলে এ অগ্নিদগ্ধের ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালে দগ্ধ রাজিবের বন্ধু ডা. সুদীপ দে বলেন, মঙ্গলবার (২১ জুলাই) দিনগত রাত দেড়টার দিকে বাসায় রাজিব একটি বড় বোতল থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ছোট বোতলে ঢালছিলেন। তখন বোতল থেকে স্যানিটাইজার পড়ে গেলে মুখে সিগারেট অথবা মশার কয়েলের আগুনের সংস্পর্শে তার শরীরে আগুন ধরে যায়। তা দেখে তার স্ত্রী সম্ভবত তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে তিনিও দগ্ধ হন। পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের ভাড়াটিয়ারা তাদের উদ্ধার করে রাতেই শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনিস্টিটিউটে ভর্তি করেন।
দগ্ধ ডা. রাজিবের কাকাতো বোন তপু ভট্টচার্য বলেন, ওই বাসায় তারা স্বামী-স্ত্রী ও মেয়ে, এবং রাজিবের বাবা থাকেন। তাদের মেয়ে রাজশ্রী ভট্টাচার্যকে ৩ সপ্তাহ আগে কুমিল্লায় দাদীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
তিনি আরও জানান, ৬ বছর আগে প্রেমের সম্পর্কে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগে ছিল। এটি শুধু একটি দুর্ঘটনা বলে আমাদের মনে হচ্ছে না। অন্য কোনো কারণও থাকতে পারে বলে আমাদের ধারণা।