সুইডেনে ফিরে গেলে তার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র কোন ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না এ মর্মে কূটনৈতিক নিশ্চয়তা চেয়েছেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ।
তিনি বলেছেন, যৌন হয়রানির মামলায় ব্রিটিশ সুপ্রিমকোর্টের আদেশ অনুযায়ী জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে তিনি সুইডেনে যেতে প্রস্তুত। কিন্তু তার ভয়, সেখানে গেলে সুইডেন কর্তৃপক্ষ মার্কিন গোপন নথি ও তারবার্তা উইকিলিকসে ফাঁস করে দেওয়ায় গুপ্তচরবৃত্তি এবং ষড়যন্ত্রের মামলায় তাকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে দেবে।
আর এ মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী অ্যাসাঞ্জের মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।
এ কারণেই কয়েক দিন আগে লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছন অ্যাসাঞ্জ। এখনো তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। তবে ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের চাপে ইকুয়েডরের সঙ্গে তার আবেদন নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
এখন উল্লেখিত গ্যারান্টির ভিত্তিতে সুইডেনে যেতে রাজি হয়েছেন অ্যাসাঞ্জ। তিনি বলেছেন, ‘উদাহরণ স্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্র যদি উইকিলিকসের প্রকাশনা কার্যক্রমে তাদের গ্র্যান্ড জুরির তদন্ত এবং এ ব্যাপারে ভবিষ্যতে অধিক তদন্ত না করার প্রতিশ্রুত দেয় তাহলে তা হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিশ্চয়তা… এমন কূটনৈতিক প্রতিশ্রুতির একটা মূল্য আছে।’
উল্লেখ্য, ব্যতিক্রমধর্মী ওয়েবসাইট উইকিলিকসে আফগান ও ইরাক যুদ্ধসহ আন্তর্জাতিক রাজনীতির অনেক স্পর্শকাতর ইস্যু সংশ্লিষ্ট গোপন নথি এবং কূটনৈতিক তারবার্তা ফাঁস করে দেন অ্যাসাঞ্জ। প্রকাশিত এসব তথ্য অনেক সরকার এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে।
এদিকে, লন্ডনে জন্মভূমি অস্ট্রেলিয়ার দূতাবাসে আশ্রয় না নিয়ে কেন তিনি লাতিন আমেরিকার একটি দরিদ্র দেশের দূতাবাসে আশ্রয় নিলেন এমন প্রশ্নে অ্যাসাঞ্জ বলেছেন, ‘আমরা জেনেছি, ইকুয়েডরের মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রামের প্রতি সহানুভূতিশীল।’
এছাড়া তার প্রত্যর্পণের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানালে অস্ট্রেলীয় সরকার তা প্রত্যাখ্যান করেছে। এ কারণে ‘জন্মভূমি আমাকে পরিত্যাগ’ করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন অ্যাসাঞ্জ।
তবে এ ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জুলিয়ার গিলার্ড সরকারের বক্তব্য হচ্ছে- অ্যাসাঞ্জকে রক্ষায় তাদের ক্ষমতা খুবই সীমিত। কারণ অ্যাসাঞ্জ এখন অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন না। আর অস্ট্রেলিয়ার কোন আইনও তিনি ভঙ্গ করেননি।