প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক পরিচয়ে চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীর ২০০ সিএনজিচালিত অটোরিকশার ঢাকায় চলার লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ৯১ লাখ ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম। সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যানের ভুয়া পরিপত্র ধরিয়ে দিয়ে ‘মেসার্স মেগা মটরস’ নামের ওই প্রতিষ্ঠানকে উল্টো বিপদে ফেলেন এই ধূর্ত প্রতারক।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, মেগা মটরসের গুদাম থেকে দুটি চেসিস নম্বরের (একটি গাড়ির একটি নম্বরই থাকে) অবৈধ ১৭টি অটোরিকশা জব্দ করে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। তখন সাহেদ ‘বিশেষ পরিচয়’ দিয়ে চাপে ফেলে অটোরিকশাগুলো ছাড়িয়ে নেন। পুলিশ সদর দপ্তরের সিকিউরিটি সেল তাঁর ‘হাতের মুঠোয়’ বলে হুমকিও দেন। সাহেদের করা অভিযোগে ওই সেলের চার পুলিশ কর্মকর্তাকে উল্টো বিপদে পড়তে হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সহকারী উপপরিদর্শক আজমীর শরীফ ও সাদেক মো. নাজমুল হককে লঘুদণ্ড দেওয়া হয়। আর তৎকালীন উপপরিদর্শক আফতাব হোসেন ও রাজেস বড়ুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ এখনো তদন্তাধীন।
সম্প্রতি সাহেদের বিভিন্ন অপকর্ম প্রকাশের পর গত ১৩ জুলাই মেসার্স মেগা মটরসের মালিক জিয়া উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের চাচাতো ভাই সাইফুদ্দিন বাদী হয়ে ৯১ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানায় মামলা করেন। থানার ওসি সদীপ কুমার দাশ জানান, প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগেই সাহেদের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম মহানগরীর খোয়াজনগরে মেগা মটরসের গুদামে ২০১৬ সালের ৫ নভেম্বর অভিযান চালিয়ে অটোরিকশা জব্দ করার পাশাপাশি আটক করা হয় প্রতিষ্ঠানটির মালিক জিয়া মো. জাহাঙ্গীর ও ম্যানেজার জাহেদকে। উপপরিদর্শক আফতাব হোসেন ও রাজেস বড়ুয়ার নেতৃত্বাধীন টিম ওই অভিযান চালায়। পরে অতিরিক্ত উপকমিশনার হুমায়ুন কবিরও অভিযানস্থলে যান। অটোরিকশাগুলো ছাড়াতে ওই দিন অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি পুলিশের কাছে তদবির করেন। পরে চাপ তৈরি করে অটোরিকশাগুলো ছাড়িয়ে নেন। ক্ষিপ্ত হয়ে পর দিন ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে গিয়ে নগর পুলিশের তৎকালীন অতিরিক্ত কমিশনারকে সাহেদ প্রশ্ন করেন, ‘ঢাকা থেকে ফোন করার পরও কেন অটোরিকশা ছাড়াতে তাঁকে চট্টগ্রামে আসতে হলো।’