ঢাকাই চলচ্চিত্রের ১৮টি সংগঠনের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানকে বয়কট করা হয়েছে। বুধবার (১৫ জুলাই) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়। এ নিয়ে চলচ্চিত্র পাড়ায় আলোচনা যখন চরমে, তখনই জায়েদ খানকে বয়কট করার সিদ্ধান্তে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী।
এই চিত্রনায়িকা বলেন, ‘চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর সিদ্ধান্তে আমি একাগ্রতা প্রকাশ করছি। চলচ্চিত্রের স্বার্থে আমাদের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। চলচ্চিত্র একটি সামষ্টিক শিল্প মাধ্যম। এখানে একক কর্তৃত্ব বা একক স্বেচ্ছাচারিতার কোনো জায়গা নেই।’
মৌসুমী আরও বলেন, ‘শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শিল্পীর সঙ্গে নানা বিষয়ে স্বেচ্ছাচারিতা দেখিয়েছেন। অনেকেই তা মুখ বুঝে সহ্য করেছেন। আবার অনেকেই প্রতিবাদী হয়েছেন। তার বিভিন্ন অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতেই, আমি শিল্পী সমিতির বিগত নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু নির্বাচনে আমার সঙ্গে যা হয়েছে, সেটা প্রতিটা চলচ্চিত্র কর্মীই জানেন। যাই হোক, আমি চাই এই সংগঠনের মাধ্যমে চলচ্চিত্র শিল্পে যেসব অনিয়ম হচ্ছে তাও বন্ধ হোক। তাদের মাধ্যমে আবার চলচ্চিত্রের সোনালী সুদিন ফিরে আসুক।’
প্রসঙ্গত, বুধবার (১৫ জুলাই) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘চলচ্চিত্র নির্মাণে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নির্মাণ ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে এবং সুষ্ঠ পরিবেশ ও আস্থা ফিরিয়ে আনতে এ বছরের শুরুর দিকে আমরা চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠন একত্রে মিলিত হয়ে ‘চলচ্চিত্র নির্মান সংক্রান্ত নীতিমালা প্রনয়ন কমিটি’ নামে একটি কমিটি গঠন করি। সব সমিতি এই কমিটির নীতিমালার সাথে একমত পোষণ করলেও শুধুমাত্র ব্যক্তি স্বার্থের কারণে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি এর বিরোধিতা করে। আমরা তাদেরকে বোঝানোর জন্য বেশ কয়েকজন অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় সিনিয়র শিল্পীদের নিয়ে একটা সভা করি। যাদের অধিকাংশই আবার শিল্পী সমিতির সম্মানিত উপদেষ্টা। তারাও আমাদের নীতিমালাকে প্রশংসা করেন এবং চলচ্চিত্রের স্বার্থে নীতিমালাটিকে মেনে নেবার জন্য শিল্পী সমিতির নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ করেন। কিন্তু তারপরও শিল্পী সমিতির নেতৃবৃন্দ আমাদের সকলের মতামতের ভিত্তিতে তৈরী নীতিমালাকে মেনে নেননি।’
গুলজার বলেন, ‘আমরা বিশ্বস্তসূত্রে জানতে পেরেছি, এই নীতিমালার সবচেয়ে বেশি বিরোধিতা করছেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। তার কারণেই শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ অন্যান্য সকল সমিতি কর্তৃক প্রনয়নকৃত নীতিমালা মেনে নিতে পারছেন না।’
মিশা সওদাগরের বিষয়ে এ নেতা বলেন, ‘চলচ্চিত্র নির্মাণে শৃঙ্খলা আনতে ও নির্মাণ ব্যয় কমাতে গত অক্টোবরে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করেছে প্রযোজক সমিতি। এটি বাস্তবায়ন হলে চলচ্চিত্র নির্মাণের খরচ ন্যূনতম ১৫ লাখ টাকা কমে যাবে। বিষয়টি নিয়ে একটি শুটিং ফ্লোরে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটান মিশা। তখন প্রযোজক সমিতি তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়। এটা লকডাউনের আগের ঘটনা। তখন জানানো হয়, প্রযোজক সমিতির কোনও সদস্য মিশাকে নিয়ে কোনও ছবি করবেন না বা তাকে নিয়ে কেউ অনুমোদন নিতে এলে, তার ছবিটি অনুমোদন করা হবে না। সেই নিষেধাজ্ঞা এখনও বলবৎ আছে।’