আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ শুরুর আশা প্রকাশ করে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে একজন ‘দায়িত্বশীল’ রাজনীতিবিদের ভূমিকাই তিনি নেবেন।
রোববার যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী বলেন, “আমি দায়িত্ব নিয়েই কথা বলছি, দায়িত্ব প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছি প্রমাণিত হলে একজন দায়িত্বশীল রাজনৈতিক নেতা যা করে- তাই করব।”
সড়ক ভবনে গুলির ঘটনায় তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ ব্রিফিং করা হয়।
দেশের সর্ববৃহৎ নির্মাণ প্রকল্প পদ্মা সেতুর অর্থ যোগানদাতা বিশ্বব্যাংক পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত অক্টোবরে অর্থায়ন স্থগিত করে। ফলে বহু প্রতীক্ষিত এই সেতুর কাজ আটকে যায়। আভিযোগের আঙুল তখনকার যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের দিকে ওঠার পর দায়িত্বে পরিবর্তন আনেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আবুল হোসেনকে আইসিটি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে যোগাযোগের দায়িত্ব দেওয়া হয় নতুন মন্ত্রী কাদেরকে।
বিশ্ব ব্যাংকের বিষয়টি ঝুলে থাকায় গত মে মাসে মালয়েশিয়ার সঙ্গে এই সেতু নির্মাণ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করে বাংলাদেশ। সব কিছু ঠিক থাকলে মালয়েশিয়ার সঙ্গে শিগগিরই এ বিষয়ৈ চুক্তি হতে পারে বলেও গত মাসে জানান যোগাযোগ মন্ত্রী।
এদিকে বিশ্ব ব্যাংক অর্থায়ন স্থগিতের পর এ প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে একটি প্রতিবেদন দেয় বিশ্বব্যাংক। তার ভিত্তিতে পরামর্শক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শনিবার এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, “তারা (বিশ্বব্যাংক) যে প্রতিবেদন দিয়েছে এই মুহূর্তে আমার কাছে তার কোনো মূল্য নেই।”
অর্থমন্ত্রীর এই মন্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে প্রেস ব্রিফিংয়ে যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, “অর্থমন্ত্রী কি বলেছেন তা নিয়ে বিতর্কে যাব না, তিনি কি বলেছেন তা তার কাছে শুনে এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে হবে।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিশ্ব ব্যাংকের জন্য আমাদের দরজা সব সময় খোলা। বিশ্ব ব্যাংকের জট খোলার দায়িত্ব অর্থ মন্ত্রণালয়ের। বিকল্প অর্থায়ন করা হলেও বিশ্ব ব্যাংকের জন্য দরজা বন্ধ করে দিতে পারি না।”
বিকল্প ব্যবস্থায় শুধু ব্যাংক থেকে টাকা নেওয়া ছাড়াও যেমন বিদেশি বন্ড বা পিপিপির মাধ্যমেরও পদ্মা সেতুর অর্থায়ন করা সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী বলেন “যা করব বিশ্বব্যাংকের সাথে সমঝোতা করেই করব।”
২৯০ কোটি ডলারে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের ১২০ কোটি ডলার দেওয়ার কথা ছিল। এছাড়াও এডিবি, জাইকা এবং ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকও অর্থ দেওয়ার জন্য চুক্তি করেছিল।