সাঈদীর জামিন আবেদন নাকচ

সাঈদীর জামিন আবেদন নাকচ

মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

রোববার সকালে বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরুর পর সাঈদীর আইনজীবী তাজুল ইসলাম উন্নত চিকিৎসার জন্য জামিনের এই আবেদন করেন।

তাজুল আদালতে বলেন, “সাঈদী সাহেব বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ। তার জন্য যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তা যথেষ্ট নয়। এছাড়া পরিবারের সান্নিধ্যও তার প্রয়োজন।”

উন্নত চিকিৎসার জন্য সাঈদীকে লন্ডনে পাঠানোর অনুমতি চান এই আইনজীবী।

আবেদন শুনে আদালত বলেন, “এখানে দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে তার প্রয়োজন মতো চিকিৎসাই দেওয়া হচ্ছে।”

“সাঈদী সাহেবে ছেলে মারা যাবার পরে তাকে প্যারোলে মুক্তি দিলে তিনি প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়েছেন, যা তিনি করতে পারেন না। এছাড়া এ মামলার এক সাক্ষীকে মারধরের ঘটনাও ঘটেছে যা পত্র পত্রিকায় খবর হয়েছে। এ অবস্থায় তাকে জামিনে মুক্ত করা সম্ভব নয়”, বলেন আদালত।

পরে তাজুল সাংবাদিকদের বলেন, “এ নিয়ে সাতবার জামিনের আবেদন নাকচ হলো। তিনি (সাঈদী) বর্তমানে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। তার চিকিৎসা যথাযথভাবে হচ্ছে না। আমরা এ কারণেই তার জামিনের জন্য আবেদন করেছিলাম।”

আদালতের সিদ্ধান্ত ‘যথাযথো হয় নি’ দাবি করে তাজুল বলেন, “বিষয়টি আদালতের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচার করা উচিৎ ছিল।”

অন্যদিকে প্রকিকিউটর হায়দার আলী সাংবাদিকদের বলেন, “তাকে (সাঈদীকে) সব ধরনের চিকিৎসার সুযোগই এখানে দেওয়া হচ্ছে। তাই তাদের আবেদন আদালত নাকচ করে দিয়েছে।”

গত ১৪ জুন প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বড় ছেলে রফিক বিন সাঈদীর জানাজায় অংশ নেন জামায়াতের সায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। এরপর নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়লে ট্রাইব্যুনালের আদেশে তাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এরপরে জামায়াতের এ নেতাকে মিরপুর ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। সেখান থেকে তাকে আবার ইব্রাহিম কার্ডিয়াকে পাঠানো হয়।

গত বছরের ৩ অক্টোবর প্রথম ব্যক্তি হিসেবে জামায়াতে নায়েবে আমীর সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২০১০ সালের ২৯ জুন সাবেক এই সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং গত বছর ১৪ জুলাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল।

একাত্তরে তিন হাজারেরও বেশি নিরস্ত্র ব্যক্তিকে হত্যা বা হত্যায় সহযোগিতা, অন্তত নয় জনকে ধর্ষণ, বিভিন্ন বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ভাঙচুর এবং একশ থেকে দেড়শ হিন্দুকে ধর্মান্তরে বাধ্য করার অভিযোগ রয়েছে সাঈদীর বিরুদ্ধে, যাকে একাত্তরে তার এলাকার লোকজন ‘দেইল্লা রাজাকার’ নামে চিনতো।

রাজনীতি