মিসরের ক্ষমতাসীন সামরিক সুপ্রিম কাউন্সিলের প্রধান ফিল্ড মার্শাল মোহাম্মদ হুসেইন তানতাবি নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। একই সঙ্গে আগামী ৩০ জুন নতুন প্রেসিডেন্টের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জেনারেলরা।
তবে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তে তারা অনড় রয়েছে। এর মানে হলো- মুরসি একটি নির্বাচিত আইন প্রণয়নকারী সংস্থা এবং স্থায়ী সংবিধান ছাড়াই যা তার ক্ষমতা ও দায়িত্ব নির্ধারণ করে দিত- অফিসে বসতে যাচ্ছেন।
ঐতিহাসিক এ বিজয়ের প্রতিক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি তার অ্যাকাউন্টে আরবিতে টুইট করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘মিসরের আইন ও নীতিকে তার স্বচ্ছতা এবং সততার কারণে স্যালুট ও অভিনন্দন জানাই। আর যেসব সাহসী পুলিশ এবং সেনা সদস্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে রক্ষা করেছেন তাদেরও স্যালুট।’
একই সঙ্গে মিসরের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা, ন্যায় বিচার এবং সমৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুরসি।
এদিকে মুরসিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিজয়ী ঘোষণার পরই ফিলিস্তিনের হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার মানুষ আকাশে গুলি ছুড়ে উল্লাস প্রকাশ করেছে। হামাস এ ঘটনাকে ‘ঐতিহাসিক মূহূর্ত’ বলে অভিহিত করেছে।
অপরদিকে মুরসির নাম ঘোষণার পর তাহরির স্কয়ারে জমায়েতদের মধ্যে অনেকে আবেগে কেঁদে ফেলেন। এর মধ্যে একজন চিৎকার বলেন, ‘এখন আমরা সত্যিকার স্বাধীনতা পেলাম।’ অপরজন বলেন, ‘এটা আমাদের শতভাগ বিজয়। এটা আমাদের শতভাগ বিপ্লব।’ এর সঙ্গে কায়রোর আকাশে চলছে আতশবাজি, পটকা ফুটানো আর মানুষের নাচে গানে উল্লাসে তাহরির স্কয়ারে যেন এক আনন্দযজ্ঞ শুরু হয়েছে।
ব্রাদারহুডের প্রার্থী মুরসির বিজয়ের প্রতিক্রিয়ায় মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক মাগদি আবদেল হার্দি বিবিসিকে বলেছেন, ‘মুসলিম ব্রাদারহুডের মিছিলে শফিকের শিবির একাত্ম হয়ে অংশ নেবে – এতে আমার সন্দেহ আছে। তার (শফিক) পেছনে যারা আছেন তারা মিসর নিয়ন্ত্রণকারীদের মধ্যে একটা বড় অংশ। তারা লড়াই ছাড়াই কখনো ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না। তবে এর জন্য সহিংস লড়াই জরুরি নয় বরং তারা প্রাণপণে বাধা দেওয়ারই চেষ্টা করবে।’
বিবিসি জানিয়েছে, কায়রোতে মুরসির নির্বাচনী প্রচারণার হেডকোয়ার্টারে তার সমর্থকরা বিজয় উদযাপন করছেন।
তবে শফিকের নির্বাচনী হেডকোয়ার্টারে কিছু উগ্র সমর্থক সেখানে উপস্থিত সাংবাদিককে ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। তারা অভিযোগ করছে, নির্বাচনের এ ফলাফল ব্যালট বাক্স থেকে নয়, সামরিক সুপ্রিম কাউন্সিলের পক্ষ থেকে এসেছে।