ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইতালির কাছে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছে ইংল্যান্ড। পেনাল্টি শ্যুট আউটে ইতালি ৪-২ গোলে হারায় ইংলিশদের। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় গোলশূন্য থাকায় দুই দলের ভাগ্য নির্ধারণী হয় টাইব্রেকারে।
ইতালির পক্ষে মারিও বালোতেল্লি, আন্দ্রে পিরলো, অ্যান্তনিও নচেরিনো ও আলেসান্দ্রো দিয়ামান্তি গোল করেন। ব্যর্থ হয়েছেন একমাত্র রিকার্দো মন্তোলিভো। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের পক্ষে অধিনায়ক স্টিফেন জেরার্ড ও স্ট্রাইকার ওয়েন রুনি গোল করলেও অ্যাশলে ইয়ং ও অ্যাশলে কোল গোল করতে পারেননি। ইয়ংয়ের শট গোলপোস্টের ফ্রেমে লেগে প্রতিহত হয়। অন্যদিকে অ্যাশলে কোলকে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফন।
টাইব্রেকার ভাগ্য ইংলিশদের জন্য মোটেও সুখকর নয়। টাইব্রেকার ভাগ্য পরীক্ষায় আগের ছয়বারের পাঁচবারেই হারতে হয়েছে কোচ রয় হজসনের দলকে। বড় আসরগুলোর মধ্যে ১৯৯০, ১৯৯৬ ও ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে যথাক্রমে জার্মানি, আর্জেন্টিনা ও পর্তুগালের কাছে টাইব্রেকারেই কপাল পুড়েছিলো ইংল্যান্ডের। ইউরোতেও একই অবস্থা। ১৯৯৬ সালের ইউরোতে জার্মানি ও ২০০৪ সালে পতুর্গালের কাছে হেরে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছিলো থ্রি লায়ন্সদের।
যদি কিয়েভে কোয়র্টার ফাইনালে বল দখলের লড়াইয়ে নিরঙ্কুশ এগিয়ে ছিলে ইতালিই। কিন্তু স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতা ও ইংল্যান্ডের রক্ষণভাগের কড়া প্রহরায় গোল আদায় করতে ব্যর্থ হয় কোচ সিজার প্রানদেল্লির দল। অবশ্য ড্যানিয়েল ডি রসির শট বারে প্রতিহত না হলে নির্ধারিত সময়েই গোল পেতে পারতো ইতালি। অন্যদিকে ইংল্যান্ডও সুযোগ কম পায়নি। পোস্টের মাত্র ছয় গজ সামনে থেকে গ্লেন জনসন নিশানাভেদে করতে ব্যর্থতার পরিচয় দেন। ১২০ মিনিটের ম্যাচে গোল মিসের মহড়ায় মেতে ওঠে দুই দলের স্ট্রাইকাররা।
ম্যাচে উভয় পক্ষই রক্ষণাত্মক কৌশল বেছে নিয়েছিলো। ইংল্যান্ড খেলে ৪-৪-২ ফর্মেশনে। অন্যদিকে ইতালি বেছে নিয়েছিলো ৪-৩-১-২ ছক। শুরুতে ইংল্যান্ড সমানে সমান লড়লেও ম্যাচে ক্রমেই আধিপত্য বিস্তার করে আজুরিরা। এক পর্যায়ে ১৮ গজেই ছয় খেলোয়াড় দাঁড় করিয়ে দেন কোচ রয় হজসন। দুর্ভেদ্য রক্ষণ গড়ার চেষ্টা থাকলেও ইতালিয়ান আক্রমণে ইংলিশ রক্ষণদেয়ালে বারবারই ধস নামে। ম্যাচে নজর কেড়ে নেন ম্যানচেস্টার সিটির দুই তারকা গোলরক্ষক জো হার্ট ও মারিও বালোতেল্লি। প্রতিপক্ষ হিসেবে মাঠে নামেন তারা। পুরো ম্যাচেই উজ্জ্বল বালোতেল্লির বেশকিছু প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে ইংল্যান্ডকে স্বস্তি এনে দেন গোলরক্ষক হার্ট। অন্যদিকে ইতালির পোস্টের নিচে গোলরক্ষক বুফন ছিলেণ নির্ভরতার প্রতীক। সবমিলিয়ে এবারের প্রতিযোগিতায় নির্ধারিত সময়ে গোলশূণ্য থাকা একমাত্র ম্যাচের স্বীকৃতি পায় থ্রি লায়ন্স ও আজুরিদের লড়াইটি।
বৃহস্পতিবার ওয়ারশতে সেমিফাইনাল লড়াইয়ে জার্মানির মুখোমুখি হবে ইতালি।