শুধুমাত্র ভারত নয়, সারা বিশ্বের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর গালওয়ান সংঘর্ষের সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে। এমনটাই মনে করছেন দেশটির সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি।
তিনি বলেন, ‘আমি এটার উপর গুরুত্ব আরোপ করতে চাই যে ইন্দো-চিনের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর লাদাখের এই নির্দিষ্ট পরিস্থিতি (গালওয়ান সংঘর্ষ) শুধুমাত্র আমাদের জাতীয় কৌশলগত স্বার্থের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয় নয়, এটার সুদূরপ্রসারী ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব থাকবে।’
প্রথম ইউপিএ সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২২ মে থেকে ২০০৬ সালের ২২ অক্টোবর নিজেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন প্রণববাবু। তিনি বলেন, এটা ‘আমার নিজস্ব মতামত যে আমাদের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতা রক্ষাকারী বীর (জওয়ানদের) কাজের তুলনায় ভারতমাতার স্বার্থের জন্য কোনও কাজই বড় হয়।’
প্রাক্তন কংগ্রেস নেতার মতে, লাদাখের পরিস্থিতির ফলে দেশের বিবেকে আঘাত লেগেছে। আর সেই আঘাত ঠিক করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ঐক্যমত অত্যন্ত প্রয়োজন। আর সেই ঐক্যমতে পৌঁছানোর বেশিরভাগ দায় কেন্দ্রীয় সরকারের উপর বর্তায়। তাঁর কথায়, ‘দেশের বিবেকে আঘাত লেগেছে এবং দুটি বিরোধী পক্ষের ঐক্যমতের মাধ্যমে সন্তোষজনক সমাধান করতে হবে। সশস্ত্র বাহিনী-সহ বিভিন্ন পক্ষকে নিয়ে সেই দায়িত্বের বেশিরভাগটাই পড়ে ভারত সরকারের উপর। এটা বর্তমান সরকারকে নিশ্চিত করতে যে আমাদের জাতীয় স্বার্থ ছাড়া যেন কোনও বিষয়কে সর্বোত্তম হিসেবে বিবেচনা করা না হয়।’
ইতিমধ্যে অবশ্য ভারত এবং চিন সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী শুক্রবার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ভার্চুয়াল বৈঠকে হাজির থাকবেন বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে সরকারকে একের পর এক প্রশ্নে জেরবার করছিল কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি। প্রধানমন্ত্রী নীরব কেন, তা নিয়েও খোঁচা দিচ্ছিলেন বিরোধীরা। সেই আক্রমণ ভোঁতা করতেই সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের। আর সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলিকে মোদী যদি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিল, তাতে অবার হওয়ার কিছু থাকবে না।