রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় তলার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ১১ নম্বর বেডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন এক গৃহবধূ। পাষণ্ড স্বামীর বর্বর নির্যাতনে তার সারা শরীর জখম।
নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূকে বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরকীয়ার অভিযোগে কুষ্টিয়ার তার শরীরে খেজুর গাছের কাঁটা ঢুকিয়ে পৈশাচিক কায়দায় নির্যাতন করেছেন তার স্বামী।
ওই গৃহবধূর (৪৭) বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার গোবরগাড়া গ্রামে।
যন্ত্রণায় জড়জড় ওই গৃহবধূ জানান, স্বামী আব্দুল হামিদ গত বুধবার দুপুরে কথা বলতে বলতে তাকে একটি আখ ক্ষেতে নিয়ে যান। একপর্যায়ে আচমকা দড়ি দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে ফেলেন হামিদ। এরপর পর পুরুষের সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্ক থাকার মিথ্যা অপবাদ এনে হাঁসুয়া দিয়ে তার মাথার চুল কেটে দেন।
এসময় তিনি চিৎকার করলে তার মুখে কাপড় গুঁজে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তার বুকে এবং গোপনাঙ্গে খেজুরের কাঁটা ঢুকিয়ে খুঁচিয়ে নির্যাতন করেন হামিদ। এতে তিনি নেতিয়ে পড়লে স্বামী তাকে সেখানে ফেলে চলে যান। পরে তিনি বহু কষ্টে হাত-পায়ের বাঁধন খুলে বাড়িতে ফেরেন।
ঘরে এসে নিজেই বুকের কাঁটাগুলো বের করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে বৃহস্পতিবার সকালে শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে প্রথমে তাকে ২৮নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শরীর থেকে চার-পাঁচটি কাঁটা বের করা হয়। পরে শুক্রবার সকালে তাকে হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু তার গোপনাঙ্গে কাঁটা থেকে যাওয়ায় ফের ৩নং ওয়ার্ডে পাঠানো হয়।
ওই ওয়ার্ডের চিকিৎসক নূরে জান্নাত জানান, তিনি গৃহবধূর গোপনাঙ্গ থেকে দু’টি ভাঙা কাঁটা বের করেছেন। বর্তমানে তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত। তবে তার সুস্থ হতে বেশ সময় লাগবে।
প্রসঙ্গত, এ ঘটনায় নির্যাতিত গৃহবধূর ছেলে বৃহস্পতিবার রাতেই দৌলতপুর থানায় মামলা করেছেন। তবে অভিযুক্ত স্বামী গা ঢাকা দিয়েছেন।