পরিবেশবান্ধব জাহাজভাঙা শিল্পের জন্য শিপ বিল্ডিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং বোর্ড গঠনের কাজ শুরু করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। এ বোর্ডের মাধ্যমে জাহাজভাঙা শিল্পকে রেড ইন্ডাস্ট্রি থেকে গ্রিন ইন্ডাস্ট্রিজে পরিণত করা হবে। দ্রুত পরিবেশবান্ধব জাহাজভাঙা ও রিসাইক্লিং শিল্পের উন্নয়ন ঘটিয়ে দেশের শিল্পায়ন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়াই এ বোর্ড গঠনের অন্যতম লক্ষ্য।
বৃহস্পতিবার জাহাজভাঙা ও জাহাজ রিসাইক্লিং বিধিমালা-২০১১ এর সুষ্ঠু বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সভাপতিত্বকালে শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া এসব কথা বলেন। শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ বি এম খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক মনোয়ার ইসলামসহ স্বরাষ্ট্র, ভূমি, নৌ-পরিবহন, পররাষ্ট্র, শিল্প মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, বিস্ফোরক অধিদফতর, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড, শ্রম পরিদফতর, সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর এবং বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় উপস্থিত স্টেকহোল্ডারদের পক্ষ থেকে সবুজ শিল্পায়নের জন্য জাহাজভাঙা ও জাহাজ রিসাইক্লিং বিধিমালা-২০১১ এর কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিমার্জনসহ অন্যান্য সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এক্ষেত্রে দ্রুত শিপবিল্ডিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং বোর্ড গঠনের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়। পরিবেশবান্ধব জাহাজভাঙা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কোনো ধরণের সমস্যা পরিলক্ষিত হলে, এর সমাধানে একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। এ কমিটি প্রতি মাসে বৈঠক করে উদ্ভুত সমস্যা সমাধানের সিদ্ধান্ত নেবে।
সভায় জাহাজভাঙা ও রিসাইক্লিং বিধিমালা পরিমার্জনের আগ পর্যন্ত বিদ্যমান বিধিমালা অনুসরণ করেই সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সভায় শিল্পমন্ত্রী আরো বলেন, “শিল্পায়নের জন্য স্টিলের কোনো বিকল্প নেই। ভাসমান লোহার খনি হিসেবে জাহাজভাঙা শিল্প দেশের অভ্যন্তরীণ লোহার চাহিদার বিরাট অংশ পূরণ করছে। এ শিল্প থেকে প্রাপ্ত ফার্নিচার ও স্টিল দেশের পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। ”
দিলীপ বড়ুয়া বলেন, “জনগণের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে একটি শিল্প আইন প্রণয়নের কাজ এগিয়ে চলেছে। পরিবেশ সুরক্ষায় এ শিল্প আইন অনুযায়ী প্রত্যেক শিল্প কারখানায় বর্জ্য শোধনাগার (ইটিপি) নির্মাণ বাধ্যতামূলক করা হবে। ২০২১ সাল নাগাদ শিল্পসমৃদ্ধ মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে মহাজোট সরকার পরিবেশবান্ধব জাহাজভাঙা ও রিসাইক্লিং শিল্প গড়ে তুলতে অঙ্গীকারবদ্ধ।”