লন্ডন ওভাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্রিটিশ ও বাংলাদেশি এমপিদের মধ্যে অনুষ্ঠিত প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার লন্ডন সময় বেলা ১টা ৩০ মিনিট থেকে বেলা ৪টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত খেলা চলে।
খেলার প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ২০ ওভারে ২১৩ রান করে ব্যাটিং পর্ব শেষ করে বাংলাদেশ দল। জবাবে ২১৪ রান তাড়া করতে নেমে ব্রিটিশ দল করে ১৬৬ রান।
ওভালের ইনডোর ক্রিকেট ম্যাচের এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের এমপিদের মধ্যে অংশ নেন নাজমুল হাসান পাপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জাহিদ আহসান রাসেল, মুরাদ জং, শাহ আলম, মোশতাক আহমদ রুহি, নসরুল হামিদ বীপু, ডা. মুরাদ হাসান, জুনায়েদ আহমদ পলক ও শফিকুল ইসলাম অপু প্রমুখ।
ব্রিটিশ এমপিদের মধ্যে নেন জন রেডউড এমপি, বব ব্ল্যাকম্যান, মার্ক ল্যাঙ্কাস্টার, রিচার্ড হিলার, এডওয়ার্ড ডেভিস ও গ্রাহাম স্টুয়ার্ট প্রমুখ।
বাংলাদেশ দলের পক্ষে ক্যাপ্টেন নাজমুল হাসান পাপন এমপিসহ কয়েকজন ব্যাটিং এ অংশ নেন।
ব্রিটিশ দলের ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পালন করেন কনজারভেটিভ দলীয় প্রভাবশালী এমপি জন রেডউড।
এদিকে, খেলা শুরুর আগে বাংলাদেশ ও ব্রিটিশ দলের এমপিরা আলাদাভাবে ওয়ার্মআপ করেন। ব্রিটিশ দলের ক্যাপ্টেন জন রেডউড ইনডোর স্টেডিয়ামে খেলার নিয়ম কানুন সম্পর্কে উভয় দলের খেলোয়াড়দের অবহিত করেন খেলা শুরুর আগে।
বাংলাদেশ দলের ক্যাপ্টেন নাজমুল হাসান পাপন এমপি নিজ দলের খেলোয়াড়দের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দানের মাধ্যমে খেলা শুরু করেন। খেলার ফাঁকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বাংলাদেশ দলের ক্যাপ্টেন নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘এটি একটি প্রীতি ম্যাচ। জয়-পরাজয় বড় কথা নয়, এই খেলার সুযোগে দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের এমপিদের মধ্যে একটি যোগাযোগ সৃষ্টি হলো, এটিই বড় কথা।’
তিনি জানান, গত বছর বাংলাদেশে ব্রিটিশ এমপিদের সঙ্গে বাংলাদেশের এমপিদের এরকমই একটি প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যাতে বাংলাদেশ বিজয়ী হয়। ঐ সময় ব্রিটিশ এমপিদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের এমপিদের ব্রিটেনে এসে প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ খেলা আমন্ত্রণ জানানো হয়।
পাপন জানান, এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন ব্রিটিশ এমপির সঙ্গে তাদের সৌজন্য বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে দুই দেশের পারস্পরিক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক কীভাবে আরও উন্নত করা যায় আলোচিত হয়। তবে রাজনৈতিক কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ব্রিটেনের পারস্পরিক ঘনিষ্ট সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বাংলাদেশের অন্যতম দাতা দেশ ব্রিটেন সব সময়ই বন্ধুর হাত বাড়িয়ে বাংলাদেশের পাশে ছিল এখনও আছে। দুই দেশের রাষ্ট্রীয় শীর্ষ পর্যায়ে বিভিন্ন সময় যোগাযোগ, বৈঠক হলেও দুই পার্লামেন্টের এমপিদের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কোনো যোগাযোগ খুব একটা ছিল না।
ক্রিকেট ম্যাচের মূল্যায়ন করতে গিয়ে পাপন বলেন, ‘প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচের মাধ্যমে দুই পার্লামেন্টের এমপিদের যোগাযোগেরই শুভ সূচনা হয়েছে। এর সূচনা হয় বাংলাদেশে, সেই ধারাবাহিকতারই ফল লন্ডনের ওভালে এই প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ। আমরা খেলার জয়-পরাজয়কে বড় করে দেখছি না। ম্যাচটিকে আমাদের পারস্পরিক যোগাযোগের বিজয় হিসেবে দেখছি।’
ব্রিটিশ দলের ক্যাপ্টেন জন রেডউড বলেন, ‘এটি একটি চমৎকার ইভেন্ট। বন্ধুপ্রতীম দুই দেশের পার্লামেন্টের সেতুবন্ধন হিসেবেই আমরা দেখছি আজকের এই প্রীতি ম্যাচকে।’
ব্রিটেন-বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ পারস্পরিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে জন রেডউড বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ব্রিটেনে অনুষ্ঠিত প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচগুলো আমাদের ঐ সম্পর্ক আরও জোড়দার করবে।’
উল্লেখ্য, গত বছর একই ধরনের একটি প্রীতি ম্যাচে বাংলাদেশের এমপিরা হারিয়ে দেন ব্রিটিশ এমপিদের। লন্ডনের ওভাল স্টেডিয়ামে ঠিক একইভাবে ব্রিটিশ এমপিদের দল আবারও পরাজিত হলো বাংলাদেশের এমপিদের কাছে।