স্বাস্থ্যমন্ত্রী আফম রুহুল হক জানিয়েছন, চলতি বছরে ১৬টি কোম্পানির ওষুধ উৎপাদন লাইসেন্স সাময়িক বাতিল, ১৪টি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন গ্রুপের ওষুধ উৎপাদন স্থগিত এবং ১টি প্রতিষ্ঠানের ওষুধ উৎপাদন সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে।
ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্রাকটিস (জিএমপি) সঠিকভাবে অনুসরণ না করায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বুধবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, “জনস্বাস্থের জন্য ক্ষতিকারক ওষুধ বাজারে যাতে বিক্রি না হয় সে ব্যাপারে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর তৎপর রয়েছে। দেশে ক্ষতিকর ওষুধ বাজার হতে অপসারণের লক্ষ্যে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর নিয়মিতভাবে ওষুধের বাজারে ও উৎপাদন কারখানায় অভিযান পরিচালনা এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। নকল ওষুধ তৈরি ও বাজারজাতকরণ প্রতিরোধকল্পে ২০১১ সালে ড্রাগ কোর্টে ১৫টি, মোবাইল কোর্টে ২১ এবং ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ১টি মামলা করা হয়েছে। বিভিন্ন কোর্টের মাধ্যমে বিভিন্ন অভিযুক্তকে বিভিন্ন মেয়াদে ৫ বছর ৬ মাস জেল এবং ৭লাখ ৭৫ হাজার ২শ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।”
নূর আফরোজ আলীর প্রশ্নের জবাবে রুহুল হক বলেন, “দেশে বর্তমানে ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে গুণগত মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদিত হয়। এটির জন্য কতগুলো প্রতিষ্ঠিত আইন নিয়ম-কানুন ও গাইড লাইন অনুসরণ করতে হয়। বাংলাদেশে ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জিএমপি গাইড লাইন মেনে ওষুধ উৎপাদন করে থাকে। আমাদের দেশের সকল ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে জিএমপি’র গাইড লাইন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসরণ এখনো সম্ভব হয়ে ওঠেনি।”
তিনি বলেন, “ইতিমধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইউকে-এমএইচআরএ, ইউ (ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন), টিজিএ (আসরালিয়া) এবং জিসিসি (গালফ স্টেট) এর যোগ্যতার সনদ অর্জন করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের গুণগত মানসম্পন্ন ওষুধ ইউরোপ ও আমেরিকাসহ বিশ্বের ৮৭টি দেশে রফতানি হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “সরকার দেশে উৎপাদিত তালিকাভুক্ত ১১৭টি ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এর জন্য সিনিয়র সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাপতিত্বে কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর প্রতিনিধিসহ ওষুধ বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে সরকারের মূল্যে নির্ধারণ কমিটি রয়েছে। তালিকা বহির্ভূত ওষুধসমূহের মূল্য স্ব স্ব উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করে থাকে। ভ্যাট প্রদানের নিমিত্তে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর হতে সর্বোচ্চ নিদের্শক মূল্যের সনদ গ্রহণ করে থাকে।”
শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে আফম রুহুল হক বলেন, “সরকারি হাসপাতালে রোগীদের সকালের নাস্তাসহ দুপুর ও রাতের খাবারের ব্যবস্থা আছে। সকালের নাস্তায় পাউরুটি, কলা, ডিম ও চিনি অন্তর্ভুক্ত। দুপুর ও রাতের খাবারে ভাত, মাছ/মাংস, সবজি ও ডালের ব্যবস্থা আছে। দৈনিক রোগী প্রতি বরাদ্দ ৭৫ টাকা।”