বিরল মৃত্তিকার বাজারে চীনের একচেটিয়া আধিপত্য ঠেকাতে এবার মাঠে নামছে ভিয়েতনাম ও জাপান। সম্প্রতি দু’দেশ এ মূল্যবান খনিজ বিষয়ে নতুন গবেষণা কেন্দ্র খুলেছে।
কম্পিউটার, টেলিভিশন, বায়ুচালিত টারবাইনসহ আধুনিক প্রযুক্তির নানা ক্ষেত্রেই বিরল মৃত্তিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার রয়েছে।
আর এই অতিপ্রয়োজনীয় খনিজের সবচে বড় উৎপাদক ও সরবরাহকারী হলো চীন। সারা বিশ্বের মোট চাহিদার ৯০ শতাংশেরও বেশি সরবরাহ আসে এ দেশ থেকে। তবে বস্তুটি রপ্তানির ব্যাপারে কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছে চীন সরকার।
চীনের এ বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় গত মার্চে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি অভিযোগ দাখিল করে।
তবে চীনের দাবি, আকরিক থেকে বিরল মৃত্তিকা সংগ্রহের কাজে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলেই তারা পদার্থটির রপ্তানির পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে।
ইলেক্ট্রনিক্স এবং অটোমোবাইল শিল্পের প্রয়োজনে জাপান তার চাহিদার ৬০ শতাংশ বিরল মৃত্তিকা আমদানি করে চীন থেকে।
চীনের ওপর এ নির্ভরশীলতা কমাতেই ভিয়েতনামের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে গবেষণা কেন্দ্র খুলছে জাপান। দু’দেশের অর্থায়নের পরিচালিক এ প্রযুক্তি কেন্দ্রের মাধ্যমে বিরল মৃত্তিকা আকরিক থেকে আলাদা করা এবং প্রক্রিয়াকরণের পর জাপানে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। আর ২০১০ সালে ভিয়েতনামের সঙ্গে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে তারা।
ভিয়েতনামে আছে বিরল মৃত্তিকার বিশাল মজুদ। আর এটিই এ প্রকল্পে তাদের সংশ্লিষ্টতার কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ ধরনের পদার্থের সর্বোচ্চ মজুদের অধিকারী ১০টি দেশের মধ্যে ভিয়েতনাম অন্যতম।
প্রকল্পের সফলতার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী চাহিদার প্রেক্ষাপটে ভিয়েতনামও ব্যাপকভাবে লাভবান হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, রসায়ন শাস্ত্রের পর্যায় সারণীর ল্যান্থেনাইড বর্গের ধাতুগুলোসহ স্ক্যানডিয়াম এবং ইটট্রিয়াম ধাতুকে বিরল মৃত্তিকা বলা হয়। এর অন্যতম কারণ এসব ধাতু পৃথিবীর সবস্থানে পাওয়া যায় না। আর পাওয়া গেলেও প্রয়োজনের তুলনায় এর বাণিজ্যিক উৎপাদন মোটেও লাভজনক হয় না।