সব দলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে একটি ‘জাতীয় সরকার’ গঠনের চেষ্টা চলছে গ্রিসে। সোমবার পার্লামেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এর পরই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া দলকে সরকার গঠনের জন্য আহবান জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট। কিন্তু নির্বাচনে কোনো দলই একক ভাবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় একটি জোট সরকার গঠন আবশ্যিক হয়ে দাঁড়ায়।
এর প্রেক্ষিতে সোমবারই সরকার গঠনের আলোচনা শুরু করে রাজনৈতিক নেতারা। তবে ব্যয় সংকোচন নীতি নিয়ে তীব্র মতবিরোধের কারণে প্রথম দিনের আলোচনা কোনো ফলাফল ছাড়াই শেষ হয়। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরপরই সোমবার একটি কোয়ালিশন সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ পান সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের প্রধান অ্যান্তোনিস সামারাস।
রক্ষণশীল নিউ ডেমোক্রেসি পার্টির প্রধান দাবি করেছেন তার দল ব্যয় সংকোচন নীতিপন্থি দল পাসোকের সঙ্গে জোট সরকার গঠনে প্রাথমিক আলোচনা সম্পন্ন করেছেন।
নির্বাচনে ব্যয় সংকোচন নীতি সমর্থনকারী দলগুলো সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও নির্বাচনে ব্যয় সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত প্রতিফলিত হয়।
নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে ব্যয় সংকোচন নীতি সমর্থনকারী দল রক্ষণশীল নিউ ডেমোক্রেসি পার্টি। ২৯ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পেয়ে ১২৯ আসন লাভ করে তারা। সরকার গঠনের জন্য মধ্যপন্থি প্যাসোক দলের সঙ্গে একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার চেষ্টা করছে তারা। প্যাসোক পার্টি ১২ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে ৩৩ টি আসন লাভ করে। উভয় দলই কৃচ্ছ্র-সাধন নীতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো।
বিপর্যয়ের সম্মুখীন অর্থনীতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য একটি ‘জাতীয় উদ্ধার সরকার’ গঠনই তাদের উদ্যোগের মূল লক্ষ বলে জানিয়েছেন দল দুটির নেতৃবৃন্দ। মঙ্গলবারের মধ্যেই সরকার গঠনে একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়া যাবে বলে এর আগে আশা প্রকাশ করে প্যাসোক পার্টি, তবে তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে নতুন সরকারে বামপন্থি সিরিজা পার্টিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলকেও অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। উল্লেখ্য, বামপন্থি সিরিজা পার্টি ২৬ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট পেয়েও ৭১ টি আসন লাভ করে। তারা ব্যয় সংকোচন নীতির কঠোর বিরোধী।
এদিকে রোববারের ভোটে প্রথম দিকে অ্যান্তোনিস সামারাসের নিউ ডেমোক্রেসি পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতার খবরে আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজারে স্বস্তির ধারা বয়ে গেলেও পরবর্তীতে রক্ষণশীল দলের পূর্ণাঙ্গ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার ব্যাপারটি স্পষ্ট হলে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয় তাদের মাঝে।
সিরিজা পার্টি এবং অপর কয়েকটি ক্ষুদ্র দল ইইউ আরোপিত কঠোর ব্যয় সংকোচন নীতির বিভিন্ন ধারার বিরোধিতা করছে।