মিশরের দ্বিতীয় দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোহাম্মদ মোরসিকে বিজয়ী দাবি করেছে তার দল মুসলিম ব্রাদারহুড। সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করে তারা।
সংবাদ সম্মেলনে মুসলিম ব্রাদারহুড দাবি করে, সারা দেশের ১৩ হাজার ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১২ হাজার ৭ শ ৯৩টিতে মোট ১ কোটি ২৭ লাখ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছে মোরসি। অপরদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী আহমেদ শফিক পেয়েছে ১ কোটি ১৮ লাখ ৪০ হাজার ভোট।
এ ঘোষণায় দলটির অন্যান্য কর্মী ও সমর্থকরা উল্লাসে ফেটে পড়ে।
এদিকে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোর দেওয়া তথ্যমতেও নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রয়েছে মুসলিম ব্রাদারহুডের মোরসি।
তবে এ পর্যন্ত প্রকাশিত সব ফলাফলই ঘোষণা করা হয়েছে অনানুষ্ঠানিক ভোট গণনার ভিত্তিতে। নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে সপ্তাহের শেষে।
আহমেদ শফিকের সমর্থকরা অবশ্য মুসলিম ব্রাদারহুডের ঘোষিত এ ফলাফল মেনে নেবে না বলে জানিয়েছে। তারা চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে চায়।
প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী মোরসি নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেন এবং সেনা শাসনের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানে নিহতদের স্মরণ করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেন।
এ সময় মিশরের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে মোরসি বলেন, ‘আমি কোন প্রতিশোধ নিতে চাই না। বরং আমি সকল মিশরীয়র জন্য কাজ করার শপথ করছি।’ সেই সাথে সৃষ্টিকর্তার প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপণ করে তিনি আধুনিক, সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এদিকে রোববার নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সংক্রান্ত নতুন সাংবিধানিক অধ্যাদেশ জারি করেছে মিশরের সুপ্রিম কাউন্সিল অব দ্যা আর্মড ফোর্সেস (এসসিএএফ)।
নতুন এ অধ্যাদেশ অনুসারে প্রেসিডেন্ট এসসিএএফ’র অনুমতি সাপেক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারবে। দেশের অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমনে সেনাবাহিনীকে আহ্বান করার ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে প্রেসিডেন্টকে।
তবে খসড়া সংবিধানটির ৫৬ অনুচ্ছেদের প্রথম ধারা অনুসারে নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত দেশের শাসনভার এসসিএএফ’র হাতেই থাকবে।
প্রসঙ্গত, সাবেক স্বৈরাচারী শাসক হোসনি মোবারকের পতনের পর পুরনো সংবিধানকে বাতিল ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে নতুন সংবিধান প্রণয়নের চেষ্টা করেও মতৈক্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হয় মিশরের রাজনৈতিক দলগুলো।
এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার এসসিএএফ একটি খসড়া সংবিধান প্রকাশ করে। সংবিধান প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন করার জন্য পার্লামেন্টে ১ শ জনের একটি দলকে অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানা যায়।
তবে মুসলিম ব্রাদারহুড তাদের এক তাৎক্ষণিক টুইটার বার্তায় এসসিএএফ’র প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সংক্রান্ত ঘোষণাকে অসাংবিধানিক এবং অকার্যকর বলে অভিহিত করেছে।