ক্ষমতায় থাকাকালে বর্তমান বিরোধী দলীয় নেতা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরোধিতা করে যে সব বক্তব্য দিয়েছেন আর্কাইভের ডকুমেন্ট পরীক্ষা করে সেগুলো প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ।
রোববার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী একথা জানান।
প্রশ্নকর্তা বলেন, “খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির প্রেক্ষিতে বলেছিলেন- একমাত্র শিশু আর পাগল ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার তিনি বুঝেন না, মানেন না, দিবেন না। আজ তিনি আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে উঠে-পড়ে লেগেছেন। আর্কাইভ থেকে তার বক্তব্য প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে কি না?”
তিনি বলেন, “১৯৯৫ সালের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কোন নিউজ বুলেটিন বাংলাদেশ টেলিভিশনের আর্কাইভে সংরক্ষিত নেই। ওই সময়ের পত্রিকা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।”
নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী জানান, প্রকৃতপক্ষে জাতীয় পত্রিকা বলতে কোন পত্রিকা নেই। বাংলাদেশে বর্তমানে ৪৬৭টি পত্রিকা মিডিয়া তালিকাভুক্ত আছে। এসবের মধ্যে ঢাকা থেকে প্রকাশিত মিডিয়া তালিকাভুক্ত পত্রিকা রয়েছে ১১৬টি।
বেনজীর আহমদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “দেশের মোট ৬০ টি পত্রিকা সাংবাদিক ও কর্মচারীদের সর্বশেষ ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী বেতন ভাতা প্রদান করে। এছাড়া ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন না করায় ছয়টি পত্রিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এসব সংবাদপত্র বেয়াতি শুল্কে বিদেশ থেকে নিউজপ্রিন্ট আমদানির সুযোগ বন্ধ রয়েছে এবং সরকারি বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাই না।”
এ বি এম আশরাফ উদ্দিন নিজানের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী জানান, বতর্মান সরকারের তিন বছরে মোট ১৫টি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে অনাপত্তি দেওয়া হয়েছে।
নুরুল ইসলাম বিএসসি’র প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “বিজ্ঞাপন বিকেন্দ্রীকরণের ফলে তথ্য মন্ত্রণালয়াধীন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর তেকে কোন পত্রিকায় সরাসরি বিজ্ঞাপন বিতরণ করা হয় না। পত্রিকাগুলোকে সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে সরাসরি বিজ্ঞাপন বিতরণ করা হয়।”
ফরিদুন্নাহার লাইলীর প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “সংবাদপত্রের অবাধ স্বাধীনতায় বর্তমান সরকার বিশ্বাসী। হলুদ সাংবাদিকতা রোধ করতে ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বেশ কয়েকটি আইন বিদ্যমান রয়েছে। এর মধ্যে সংবাদপত্র ছাপাখানা ও প্রকাশনা (ঘোষণা ও নিবন্ধকরণ) আইন-১৯৭৩, প্রেস কাউন্সিল অ্যাক্ট-১৯৭৪, প্রেস কাউন্সিল রেগুলেশন-১৯৮০, এক্রিডিটেশন সংক্রান্ত নীতিমালা-২০০৩, সংবাদপত্র, সংবাদসংস্থা ও সাংবাদিকদের জন্য অনুসরণীয় আচরণ বিধি-১৯৯৩ (সংশোধিত-২০০২) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।”
মোসলেম উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “১৯৯০ সাল থেকে ২০১২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের সংখ্যা এক হাজার ৬৯৯টি। এর মধ্যে ২০০৫ সালে সর্বোচ্চ একশ’টি চলচ্চিত্র মুক্তি পায় ও চলতি বছর এপ্রিল পর্যন্ত মাত্র ১৫টি চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে।”
এ কে এম মাইদুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ফিল্ম সিটি’ শীর্ষক একটি প্রকল্প চলতি অর্থ বছরে সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্পে (এডিপি) বরাদ্দহীনভাবে অন্তর্ভুক্ত আছে যা আগামী অর্থ বছরেও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। প্রকল্পটির জমিতে একটি বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন, স্যুটিং শেড, কয়েকটি স্যুটিং স্পটসহ বেশ কয়েকটি কার্যক্রম শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, “উদীয়মান টিভি তারকাদের চলচ্চিত্রে সুযোগ দেওয়ার জন্য এরইমধ্যে সরকার বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট নামে একটি প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করেছে।”