মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। আবাসন ব্যবসায়ীদের জন্য এই দুই শ্রেণীর মানুষ হতে পারে সবচেয়ে বড় বাজার। কারণ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত।
রোববার দুপুরে ‘আবাসন খাতের নতুন সেক্টরের সন্ধান’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রিহাব সামার ফেয়ার ২০১২ উপলক্ষে রিহ্যাব এই সেমিনারের আয়োজন করে।
নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি ও প্রাসাদ নির্মাণ লিমিটেডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু ইউসুফ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, “বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ, ফলে এর জমি নিয়ে কিছু সমস্যা থাকবে। রিয়েল এস্টেট সেক্টরের মূল ধারনা শহর বানানো। আমরা আবাসন ব্যবসায়ীরা সবাই এখনো এই কাজটি পারিনি। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের প্রয়োজনে এখনো আমরা কিছু করতে পারিনি। অথচ এটাই হতে পারে সবচেয়ে বড় মার্কেট। সেই জায়গাতে যদি আমরা কাজ করতে চাই, তাহলে সরকারের সহযোগিতা লাগবে। কারণ আমাদের হাতে এত জমি নেই, সরকারের জমি আছে।”
অধ্যাপক আবু ইউসুফ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, “সম্প্রতি আবাসন ব্যবসায়ী ও সরকারের মধ্যে নানা দূরত্ব এই সেক্টরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তবে এখন সরকারের সঙ্গে রিহ্যাব অনেকটা সমন্বয় করতে পেরেছে।”
সরকারকে দেখতে হবে এই সেক্টরে মানুষর চাওয়া পাওয়া। মিডিয়া এই বিষয়টি সরকারের কাছে তুলে ধরতে পারে। মানুষের চাহিদা পূরণে সরকারকে কাজ করতে হবে দ্রুত গতিতে। সরকারকে দেশের উন্নয়নে প্রাইভট সেক্টরের সঙ্গে কাজ করতে হবে। বড় আকারের সামাজিক চাহিদা পূরণ করতে এর বিকল্প নেই।”
তিনি বলেন, “সরকারকে বুঝতে হবে আমাদের এখন অনেক কিছু করার সামর্থ আছে। আমরা সরকারের সঙ্গে সমন্বিভাবে কাজ করার ক্ষমতা রাখি। সাহারা গ্রুপ এলো সরকার তাদের সহযোগিতা করছে। আমরা তাদের প্রতি বিদ্বেষী নই। কিন্ত নিজের দেশের প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ না দিয়ে বাইরের কাউকে দেওয়া উচিত নয়।”
অধ্যাপক ইউসুফ বলেন, “আবাসন সেক্টর ২০-৩০ বছর আগে এভাবে ছিলো না। আমাদের ভুলত্রুটি অাছে। এখন সারাদেশে রিয়েল এস্টেট বিস্তার লাভ করেছে। তাই সারাদেশে কিভাবে পরিকল্পিত নগরায়ন করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে হবে। স্থানীয় সরকার ও প্রশাসনের মাধ্যমে বেসরকারি আবাসন ব্যবসায়ীদের নিয়ে সরকার মডেল টাউন করতে পারে। ঢাকার বাইরে এসব শহর করলে ঢাকার ওপর চাপ কমবে। আর কালক্ষেপন না করে প্রাইভেট সেক্টরকে সমর্থন দিয়ে কাজ করতে হবে।”
সেমিনারে রিহ্যাব সামার ফেয়ারের স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান জহির আহমেদ বলেন, “বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আবাসন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে পরিকল্পিত আবাসন করার কথা বলেছিলো। পরিবেশবাদীরা দেশের জন্য অনেক ভালো কাজ করছেন। কিন্ত উনারা মাটি পুড়িয়ে ইটের দালান তৈরির বিরোধিতা করেন। কিন্ত এর বিকল্প কি তা বলেন না।”
তিনি বলেন, “আমরা আশা করি সরকার আবাসন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবে। আবাসন খাত দেশের অনেক বড় একটি খাত। প্রায় ৩০ লাখ লোক স্থায়ীভাবে আবাসন সেক্টরে চাকরি করে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১ কোটি লোক জড়িত। তবে আমাদের আগামীতে মধ্যবিত্তও নিম্নবিত্ত শ্রেণীর জন্য আরও কাজ করতে হবে। কারণ এই মার্কেটটাই সবচেয়ে বড়।”