বহু প্রতীক্ষিত নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করলেন অং সান সু চি

বহু প্রতীক্ষিত নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করলেন অং সান সু চি

অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করলেন বার্মার গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি।  ১৯৯১ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয় সু চি কে। কিন্তু মিয়ানমারের তৎকালীন সামরিক জান্তা সরকারের অসহযোগিতায় তখন নিজের হাতে পুরস্কার গ্রহণ করতে পারেননি তিনি।

নরওয়ের রাজধানী অসলোতে নরওয়ের রাজা হারাল্ড এবং রানি সোনজাসহ ৬০০ আমন্ত্রিত অতিথির সামনে দেওয়া নোবেল ভাষণে তিনি বলেন তাকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করার অর্থ হলো মিয়ানমারের বেদনাকে কেউ ভুলে যায়নি। তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে পশ্চিমা রাষ্ট্র সমূহের সমর্থন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে।’

অনুষ্ঠানের শুরুতে নরওয়ের নোবেল কমিটির প্রধান থরবর্ন জালান্ড বলেন, ‘প্রিয় সু চি আমরা তোমার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’  সু চিকে বিশ্বের অমূল্য সম্পদ হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন বন্দি জীবনে বাকি বিশ্বের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন থাকা অবস্থায় সু চি সারা বিশ্বের নৈতিক নেত্রীতে পরিণত হয়েছেন।

সু চি এসময় তার নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির প্রথম অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন তিনি রেডিওতে প্রথম তার নোবেল পুরস্কার পাওয়ার কথা শুনতে পান। তিনি বলেন, ‘আমার এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিলো। কিন্তু একই সঙ্গে এটি আমার হৃদয়ে একটি নতুন জানালা খুলে দিয়েছিলো’।

তিনি বলেন, গৃহবন্দিত্বের সময় অনেক সময়ই তার মনে হতো তিনি আর বাস্তব জগতে নেই। তবে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তি তাকে আবার বাস্তবে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। এই পুরষ্কার তাকে বিশ্বের বিস্তৃত মানবতার আরো কাছাকাছি এনে দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তার নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তি মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর বিশ্বের নজর টেনে আনে বলেও এ সময় উল্লেখ করেন তিনি।

মিয়ানমারের বর্তমান সংস্কারকে ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি তবে একই সঙ্গে অতিরিক্ত প্রত্যাশা করার ব্যাপারে সর্তকতাও উচ্চারণ করেন।

তিনি বলেন, তিনি ও তার তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি  মিয়ানমারের জন্য যেকোনো ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত। একই সঙ্গে তিনি মিয়ানমারের কারাগারে আটক সব রাজনৈতিক বন্দির নি:শর্ত মুক্তি দাবি করেন।

নোবেল পুরস্কার গ্রহণের পাশাপাশি শনিবার সু চি নরওয়েতে বসবাস করা মিয়ানমারের বহিষ্কৃত অধিবাসীদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন।

তার দুই সপ্তাহব্যাপী এই ইউরোপ সফরকে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করছেন বিশ্লেষকরা।

আন্তর্জাতিক