ড্রোন রফতানি করবে ভেনিজুয়েলা!

ড্রোন রফতানি করবে ভেনিজুয়েলা!

মনুষ্যবিহীন গোয়েন্দা বিমান বা ড্রোন তৈরি করেছে ভেনিজুয়েলা। প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজ জানিয়েছেন, তার দেশ ইরান, রাশিয়া এবং চীনের সহায়তায় ড্রোন বানিয়েছে। খুব শিগগির ভেনিজুয়েলা এ ধরনের বিমান বাইরে রফতানি করাও শুরু করবে বলে জানান তিনি।

গত বুধবার সেনা বাহিনী ও প্রতিরক্ষা দপ্তরের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে শ্যাভেজ বলেন, ‘আমরা তিনটি ড্রোন তৈরি করেছে। এ ধরনের বিমান আরো নির্মাণ করা হবে। তবে সামরিক কাজে নয় বরং বেসামরিক কাজে ব্যবহারের উপযোগী করেই এগুলো বানানো হবে।’

এ ব্যাপারে ভেনিজুয়েলার মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানি কাভিমের প্রেসিডেন্ট জেনারেল জুলিও মোরালেস জানিয়েছেন, পর্যবেক্ষণ টুল হিসেবে ডিজাইন করা হলেও এ বিমান কোনো অস্ত্র বহন করবে না। এটি একটানা ৯০ মিনিট আকাশে ভেসে থাকতে পারবে। তিন হাজার মিটার উচ্চতায় থেকে একশ’ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কার্যক্রম চালাতে পারবে এ বিমান।

যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সমালোচক শ্যাভেজ আর তার ঘনিষ্ঠ মিত্র ইরান। পাকিস্তান এবং ইয়েমেনে মার্কিন ড্রোন ব্যবহার নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। আর শ্যাভেজের বক্তব্যে সব সময় ইরানি প্রভাব খুঁজে ফেরে যুক্তরাষ্ট্র।

তাই শ্যাভজের ড্রোন নির্মাণের ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ভেনিজুয়েলা আগেও বহু অতিরঞ্জিত দাবি করেছে, যেমনটি ইরান করে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘ইরানের ওপর আরোপিত আন্তর্জাতিক অবরোধ কারো দ্বারা ভাঙার ব্যাপারে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। বিষয়টি আরো কতো দূর গড়ায় সে দিকে আমরা তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছি।’

ভেনিজুয়েলা যখন কোনো বিষয়ে সরব হয় তখন যুক্তরাষ্ট্র তাতে ইরানি সংশ্লিষ্ট খোঁজার চেষ্টা করে। আর এ কারণে ভেনিজুয়েলার দাবির ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে ইরানকেও টানা হচ্ছে।

অবশ্য ড্রোন প্রকল্পে ইরানের সহায়তার কথা স্বীকার করেছে ভেনিজুয়েলা। একজন সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ড্রোনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ স্থানীয়ভাবেই তৈরি ও সংযোজন করা হয়েছে। তবে এ কাজে যুক্ত প্রকৌশলীরা ইরান থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।

ভেনিজুয়েলা সামরিক করাখানার দেওয়া তথ্য মতে, ড্রোন বিমানটির দৈর্ঘ্য চার মিটার আর প্রস্থ্য তিন মিটার। এটি আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় বিরামহীনভাবে স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারণ করতে পারবে। এছাড়া রাতের বেলায় কাজ করতে সক্ষম করে গড়ে তুলতে সম্প্রতি এতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানি কাভিম বর্তমানে রাশিয়ার সহায়তায় একে-১০৩ এর মতো বন্দুক, গ্রেনেড, বিস্ফোরক এবং পাইলট বিহীন বিমান তৈরি করছে।

এছাড়া, সামরকি বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজ ভেনিজুয়েলার সামরিক শক্তি বাড়াতে কয়েকটি দেশের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।

আন্তর্জাতিক