দেশীয় আইনেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার: ওয়াশিংটনে আইন প্রতিমন্ত্রী

দেশীয় আইনেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার: ওয়াশিংটনে আইন প্রতিমন্ত্রী

আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধী হলেও দেশীয় আইনেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হবে। ইতোমধ্যে বিচারের কাজ অনেকটা এগিয়েছে। চলতি বছরের মধ্যেই তা সম্পন্ন হবে। আমরা যে সাপের লেজে পা দিয়েছি তা আমরা জানি।”

মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগের আয়োজনে আলির্টনের লি হাইওয়ের দেশি স্পাইসি রেন্টুরেন্টে সোমবার সন্ধ্যায় এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আইন প্রতিমন্ত্রী উপস্থিত সবাইকে আশ্বস্ত করে বলেন, “ছোট কিন্তু পরীক্ষিত আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দুর্বল চিত্তের বড় আইনজীবী দিয়ে লাভ নেই।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে এবং তা এ বছরই।”

বিচার করার মতো পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ আছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইন প্রতিমন্ত্রী বলেন, “স্বাক্ষ্য-প্রমাণের কোনো ঘাটতি নেই। সেই সময়ের পত্র-পত্রিকা, ছবি, নির্যাতিত মানুষের সাক্ষ্য অনেক বড় প্রমাণ। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং সাঈদীর সাক্ষ্য-প্রমাণ আরো বেশি। তারা যে অপরাধ করেছেন তা আন্তর্জাতিক ধরনের। কিন্তু তাদের বিচার হবে দেশীয় আদালতে এবং দেশীয় আইনে। তবে তা হবে অবশ্যই আন্তজার্তিকমানের। আমরা ব্রিটিশ আইন ফলো করি। তাই আমাদের জজ কোর্ট এবং হাইকোর্ট এর বিচার অবশ্যই আন্তর্জাতিকমানের।”

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “চর্তুদিকে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তৃত হয়ে আছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল হরতাল, জ্বালাও-পোড়াও করছে বিচার-কাজকে বাধাগ্রস্থ করার জন্য। দেশের মানুষকে তা বুঝতে হবে।”

বিদেশে পালিয়ে যাওয়া যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়ে তিনি বলেন, “বিদেশে পালিয়ে যাওয়া চৌধুরী, মীর কাশেম, আশরাফুজ্জামানদের অপরাধের তদন্ত হচ্ছে। বিদেশে পালিয়েও তারা রেহাই পাবে না।”

সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, “বিষয়টি তদন্তাধীন, তাই এই নিয়ে কথা বলা ঠিক নয়।” তবে এর বিচার হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “বিদেশে আপনারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের এক একজন রাষ্ট্রদূত। প্রচার-প্রপাগাণ্ডায় স্বাধীনতার বিরোধী শক্তিরা বরাবরই প্রথম। তাই আপনাদেরকেই এসব বিষয়ে জবাব দিতে হবে, প্রত্যেকেই লবিস্ট হতে হবে, অ্যাডভোকেসি করতে হবে। আপনারা যতো বেশি সোচ্চার হবেন, ততো দ্রুত বিচার কাজ ত্বরান্বিত হবে।”

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে ১৮ দলের অবস্থানের ব্যাপারে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “ওটা তাদের আসল দাবি না। ওটা হলো তাদের কৌশল। বিচারকার্য বাধাগ্রস্থ করার অপকৌশল।”

তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ কী চায়? বাংলাদেশের মানুষ চায় সুষ্ঠু নির্বাচন। তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা দরকার তা করার জন্য বিরোধী দল যে কোনো সময় আমাদের সঙ্গে সংলাপে বসতে পারে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা ছিল না, এটা সাময়িক একটা ব্যবস্থা। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা কেমন হবে তা নিয়ে ষে কোনো সময় আলোচনায় বসতে আমরা প্রস্তুত।”

অনুষ্ঠানে মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগের সবস্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্য রাখেন- অ্যাটর্নি আলমগীর, মুক্তিযোদ্ধা হারুন চৌধুরী, ড. গোলাম আক্তার, সাদেক খান, নুরুল আমিন নুরু, শেখ রাশেল, দীপক বড়ুয়া, সেলিনা চৌধুরী, জিয়া উদ্দীন, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

সবশেষে আইন প্রতিমন্ত্রী স্থানীয় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

বাংলাদেশ