সাম্প্রদায়িক সংঘাত পীড়িত মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ সফরে গেছেন জাতিসংঘের এক বিশেষ দূত। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত বিজয় নামবিয়ার বুধবার রাখাইন প্রদেশের রাজধানী সিত্তে পৌঁছেছেন । তিনি বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন মঙডু এলাকাও সফর করবেন বলে জানা গেছে। সাম্প্রতিক সহিংসতায় এই এলাকাই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে।
প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলমান এই সহিংসতায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোক নিহত হওয়ার পাশাপাশি অসংখ্য লোক বাড়িঘর ছাড়া হয়েছে। রাখাইন সম্প্রদায় এবং স্থানীয় সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘটিত এই ভয়াবহ দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে পুরো প্রদেশে।
মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক এবং মানবিক সহায়তা সমন্বয়ক অশোক নিগাম একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সহিংসতা সত্ত্বেও উপদ্রুত এলাকায় সাহায্য অব্যাহত রাখার বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে জাতিসংঘ।
তবে ইতিমধ্যেই সংঘাত কবলিত মঙডু থেকে অধিকাংশ বিদেশী কর্মীকে সরিয়ে নিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের রাখাইন রাজ্যের প্রধান কার্যাল্যয় এখানেই অবস্থিত। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা ও রাখাইনদের মধ্যে গত ৫ দিনের সংঘাতে এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ জন নিহত এবং ৪১ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এদের বেশির ভাগই রোহিঙ্গা মুসলিম।
তবে নিহতের এই সংখ্যার মধ্যে গত ৩ জুন বৌদ্ধ দাঙ্গাকারীদের হাতে নিহত দশ মুসলিম বাসযাত্রী অর্ন্তভুক্ত নয় বলে জানা গেছে।
এদিকে নিউইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বুধবার বাংলাদেশের প্রতি সীমান্ত খুলে দেওয়ার আহবান জানিয়েছে। মঙ্গলবার প্রায় ১ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীবাহী নৌকাকে বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে ফিরিয়ে দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
এ প্রসঙ্গে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের শরণার্থী বিষয়ক কার্যক্রমের পরিচালক বিল ফ্রেলিক বলেন, ‘মিয়ানমারের সহিংসতা যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে তখন সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত আক্রান্ত লোকদের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।’ পাশাপাশি তিনি অন্যান্য দেশকেও এই শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তা প্রদানে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।