জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। এর আগে এ ইস্যুতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একাধিক বার তাঁর সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে ভারত। এবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসের মধ্যস্থতার প্রস্তাবও খারিজ করল দিল্লি।। দিল্লির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ব্যাপারে কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না। বরং কাশ্মীর নিয়ে মাথা ঘামানোর বদলে, পাকিস্তান বেআইনিভাবে ভারতের যে অঞ্চল দখল করে রেখেছে, জাতিসংঘকে তা মুক্ত করার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করেছে নয়াদিল্লি।
রবিবার চারদিনের সফরে পাকিস্তান পৌঁছেছেন অ্যান্তোনিয়ো গুতেরেস। সে দেশে পা রেখেই পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মোহাম্মদ কুরেশির সঙ্গে একদফা বৈঠক করেন তিনি। তারপর সাংবাদিক বৈঠক করার সময়ই কাশ্মীর এবং বর্তমানে ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
গুতেরেস বলেন, কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি এবং নিয়ন্ত্রণরেখায় ঘটে চলা সঙ্ঘাত নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন আমি। শুরু থেকেই এ ব্যাপারে সাহায্য করতে চেয়েছিলাম। দুই দেশ রাজি থাকলে এ নিয়ে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত আমি।
ভারত-পাকিস্তান দুই দেশেরই আরও সংযত হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন গুতেরেস।
নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে অবশ্য গুতেরেসের প্রস্তাব পত্রপাঠ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেন, নিজের অবস্থান থেকে একচুলও সরে আসেনি ভারত। জম্মু-কাশ্মীর চিরকাল ভারতের অখণ্ড অংশ ছিল, আছে এবং থাকবে। গায়ের জোরে, বেআইনি ভাবে পাকিস্তান যে অঞ্চলগুলিকে দখল করে রেখেছে, সেগুলিকে মুক্ত করতে বরং পদক্ষেপ করা হোক।
ভারত ও পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সমস্যাগুলো নিজেরাই মিটিয়ে নেবে এবং এ ব্যাপারে তৃতীয় কোনও পক্ষের হস্তক্ষেপ একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন রবীশ কুমার।
তাঁর মতে, এর চেয়ে জম্মু-কাশ্মীরসহ একাধিক অঞ্চলে সীমান্ত সন্ত্রাস চালানোয় পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করতে পারতেন গুতেরেস।
এদিকে, সন্ত্রাস দমনে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় গত কয়েক বছর ধরে পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক বাতিল করে আসছে ভারত। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে পাকিস্তানের মদদপুষ্ট জঙ্গিরা কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয় লক্ষ্য করে হামলা চালালে, তার পাল্টা বালাকোট এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিবিরোধী অভিযান চালায় ভারতীয় বিমানসেনা। সেই নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সঙ্ঘাত পরিস্থিতি দেখা দেয়। তার মধ্যেই গত বছর আগস্টের শুরুতে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করে উপত্যকাকে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছে পাকিস্তান। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও ভারতকে কোণঠাসা করার চেষ্টাও চালিয়েছে ইসলামাবাদ।
সূত্র : আনন্দবাজার