‘আবেদন করলেই খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্তি পাবেন না’

‘আবেদন করলেই খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্তি পাবেন না’

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্যারোলে মুক্তির জন্য আবেদন করলেই যে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হবে বিষয়টি সেরকম নয়। খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি আদৌ প্রয়োজন আছে কি না সেটাও দেখতে হবে। কারণ তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন। বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক সমস্যাগুলো পুরনো, সেই সমস্যাগুলোকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখিয়ে বিএনপি জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে।

আজ রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির অডিটরিয়ামে তথ্যমন্ত্রীর পিতা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাবেক জেলা পিপি মরহুম অ্যাডভোকেট আলহাজ্ব নুরুচ্ছাফা তালুকদারের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দিতে চায়। সেটাকে বিএনপি আন্দোলনের বিজয় বলছে। যদি খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয় প্রতিষ্ঠিত হয় সেটা কি আন্দোলনের ফল নাকি মানবিকতা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমত বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার কিংবা তার দল কোনোটার পক্ষ থেকে প্যারোলে মুক্তির আবেদন জানায়নি। তারা মুক্তির কথাটা বলছেন টেলিভিশনের সামনে ও গণমাধ্যমে। আমরা পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি পরিবারের পক্ষ থেকে প্যারোলে হলেও তার মুক্তি চান।

তিনি বলেন, প্যারোলে হচ্ছে বিশেষ ব্যবস্থায় মুক্তি। বিভিন্ন বন্দিদের প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়। এটি কোনোভাবেই আইনের মাধ্যমে মুক্তি নয়। এটি একটা প্রশাসনিক ব্যবস্থা। কারো নিকটাত্মীয় স্বজন মৃত্যুবরণ করলে বা অন্যকোনো বিশেষ কারণে নানা সময় প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়। বেগম খালেদা জিয়া স্বাস্থ্যগত কারণে প্যারোলে মুক্তি চান কি না? তাদের দল বারবার বলছে আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে। গত ১১ বছরে বিএনপির পক্ষে কোনো আন্দোলন করা সম্ভবপর হয়নি।

তিনি বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার কোনো ক্ষমতা বিএনপির নাই। বেগম খালেদা জিয়া কোনো রাজবন্দি নন। তাকে মুক্ত করতে হলে আইনের মাধ্যমেই করতে হবে। তারা যে প্যারোলের কথাগুলো বলছেন তারা যখনই আবেদন করবে তখনই শুধুমাত্র এটি নিয়ে কথা বলার সুযোগ তৈরি হবে, তার আগে নয়। তাদের পক্ষ থেকে তো এখনো প্যারোলে মুক্তির কোনো আবেদন জানানো হয়নি।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ২০০৪ সালে যখন বেগম খালেদা জিয়া দেশের প্রধানমন্ত্রী তখন তার সরকারের পৃষ্টপোষকতায় এবং তার পুত্রের তত্ত্বাবধানে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। আর বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে সাজা ভোগ করছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি জিঘাংসার রাজনীতি করতেন তাহলে তিনি এখন কারাগারেই থাকতেন। তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে থাকতেন না।

স্মরণসভা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুলের সভাপতিত্বে অ্যাডভোকেট নিখিল কুমার নাথের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট মো. দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোক্তার আহমদ, সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন মো. জিয়াউদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক, আ ক ম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ, আয়ুব খাঁন, অশোক কুমার দাশ, মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দিন চৌধুরী, জেলা পিপি নাজমুল আহসান খাঁন। এতে মরহুমের পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখেন মরহুমের সহধর্মিনী অ্যাডভোকেট কামরুননাহার বেগম।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর